খেলাঘর ( কবি ও কবিতা )
OoO উৎসর্গ OoO
-----------------------------
আমার সামান্য সীমিত ও ক্ষুদ্র জ্ঞানের গন্ডিতে রচিত কয়েকটি কবিতার সম্ভার নিয়ে " খেলাঘর ( কবি ও কবিতা ) " নামাঙ্কিত e-book টি আমি আমার হৃদয়ের নমস্য দেবাসনে প্রতিষ্ঠিত দেব তুল্য
প্রফুল্ল কানন দেশপ্রিয় বিদ্যামন্দির ( উচ্চ মাধ্যমিক ) কলকাতা - ৭০০১০১ এর ভূতপূর্ব সহকারী প্রধান শিক্ষক তথা বিধাননগর কর্পোরেশন - এর জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি শ্রদ্ধেয় ও পূজনীয়
শ্রীযুক্ত মনোরঞ্জন ঘোষ মহাশয়ের
** পাদপদ্মতলে উৎসর্গ করিলাম **
∆ প্রার্থনা ∆
-------------------
আমি দুর্বল ও অসহায় এক কবি। আমার স্বল্প ও সীমিত জ্ঞানের গন্ডিতে রচিত কবিতার গুনগত মানের মূল্যায়নও যৎ সামান্যই। তবুও হে আমার নমঃ নমঃ নমঃ পাঠক সমাজ আমার কবিতা গুলো পাঠের মধ্য দিয়ে আমাকে সবল ও সহায়সম্বল করে তুলতে সাহায্য করুন।
সর্বপরি
জ্ঞানে ও অজ্ঞানে সকল ভূল ত্রুটির জন্য জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল স্তরের পাঠক ও শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে আমি করজোড়ে নতমস্তকে ক্ষমা প্রার্থী।
0#0 কৃতজ্ঞতা 0#0
--------------------------------
যার অকৃত্রিম উৎসাহ ও হৃদয়স্ফুর্তঃ প্রেরনা আমার এই ক্ষুদ্র ও ছোট্ট কবিতার অর্ঘসম্ভার " খেলাঘর ( কবি ও কবিতা ) " নামাঙ্কিত e-book টি সৃষ্টিতে সাহায্য প্রদান করেছে সেই ঐশ্বরিক প্রতিভার অধিকারী ও আমার প্রানের চাতকপ্রিয় বন্ধুবর
স্বর্গীয় রাজকুমার বাগ - কে
আন্তরিক প্রীতি শুভেচ্ছা ভালোবাসা ও শুভকামনায় সমৃদ্ধ নান্দনিক স্বর্গীয় কৃতজ্ঞতা জানাই।
<•><•><•><•><•><•><•><•><•><•><•>
<O><O><O><O><O><O><O><O><O>
(১) কবিতা : " স্বর্গসুখ "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
ভ্রান্ত দিশার আঁধারে আমি,
শুধু একা পথে চলি।
হৃদয় গহনো বেদনায়,
কারোরে না কিছু বলি।
আমার সাগর আমার পাহাড়,
আমার স্মৃতির শীতল নদী।
আরো আরো আরো কাছে,
স্পর্শে তারে পেতাম যদি।
শীতল স্রোতে ভেসে ভেসে,
স্বপ্নের নয়নে মৃদু হাসি হেসে,
উড়ে যেতাম দৈব চূড়ার কাছে,
যেখানে আমার স্বর্গসুখ আছে।
ভালোবেসে যে যার বেশে,
কান্নাহাসির শেষে মিলিবো যে এসে,
মোহনার মোহমায়া জলে,
জীবনের ফুলে ফলে শত ভুলে।
তুমিও যাবে কি বন্ধু,
কেনো যাবে দিয়ে ফাঁকি,
কতো কাজ এখনও যে,
পড়ে আছে শুধু বাকি।
তবু যদি যেতে চাও,
কর্মের মালা গুলো তুমি গেঁথে দাও।
নব নব পথিকেরা নেবে তাহা তুলে,
সবকিছু ভুলে হিল্লোলে দুলে।
যদি থাকো সব ভুলে,
আঁখি মাঝে মন খুলে।
দেখিবে তোমার প্রেমের বাহার,
গাছে গাছে শুধু নাচে।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
-------------------------------------------------------
(২) কবিতা : " ধূসরিত প্রান্তে "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
বেদনার বাঁশি সুর,
চলে যায় বহুদূর।
আসে ঘুরে ফিরে ফিরে,
নিরাশার আঁখি নীরে।
গুনগুন গুঞ্জনে ফাগুনের আগুনে,
হৃদয়ের গহনে হিল্লোলে দুলে ধীরে।
কেঁপে কেঁপে কেটে গেলো,
হৃদয়ের কতো বেলা।
পল্লবো গুঞ্জনে ধূসরিত প্রান্তে,
জীবনেরই অন্তরে,
শেষ হয়ে এলো খেলা।
থেমে গেল জীবনের,
হাসিখুশি বেদনার,
যত আছে সব মেলা।
কাঁটা ভরা মাঠে ঘাটে,
জীবনের ভাঙ্গা হাটে,
স্বপ্নের বাসরে,
কারা যেন নাচে আজ,
মিলনের আসরে।
যেতে যেতে কোনো মতে,
সুখদুখ পথে পথে,
সাথী যদি খুঁজে পাই,
তুলে নেবো বুকে তাই।
ডাকে যদি বোলে প্রিয়া,
জ্বেলে দিয়ে সব দিয়া,
পুলকিত হবে হিয়া,
তব কোলে হিল্লোলে,
আমি ছুটে গিয়া।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
-----------------------------------------------------
(৩) কবিতা : " ঋতুর পদাবলী "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
ভোরের বেলায় বিকায় হেলায়,
ভাঙা গড়ার নিত্য খেলায়,
চৈত্র মাসের চড়ক পূজার,
বাজনা আর শিবের গাজন।
বাউল গানের ব্যস্ত ভীড়ে,
চলছে সবাই ধীরে ধীরে।
ভীড়ের মাঝে ঘোড়ার সাজ,
দেখছি শুধুই আমরা আজ।
গন্ধে প্রান্ত উড়ছে মনে,
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে,
চৈত্র মাস সর্বনাশ দিচ্ছে ডাকে।
ফেরারী মন বুঝি তাই আজ,
চলেছে ঝোড়ো পথের আঁকেবাঁকে।
মধুপাল যৌবনে আছে আজি মৌবনে,
নিশি ঘরে জ্বলিছে আগুন,
বহিছে শীতল পবন ফাগুন।
সেই চুমু সেই মুখ সেই একই নদী,
থাকে যদি থাক না সুর তাল ছন্দ,
আহাঃ কি আনন্দ সেই একই গন্ধ।
ঝরে পড়ে কতো পাতা,
উড়ে উড়ে ঐ দূরে।
পাখিদের কলতান,
নৌকায় আসে ঘুরে।
বৈশাখে ভাঙে কতো,
জীবনের বিশ্বাস।
তারই মাঝে খুঁজে পাই,
সৃষ্টির নিঃশ্বাস।
ঋতুবতী রমনীরা ছোটে লাজে লাজে,
সৃষ্টির লহরীতে দ্যাখো তারা সাজে।
একে একে চলে যায়,
চলে যায় ঋতুরাজও।
সৃষ্টির কাজে দ্যাখো,
সবারে যে লাগে আজও।
ঝরা পাতা বিপ্লবে,
থেমে গেছে কতো আশা।
ঝরে গেছে শত শত,
জীবনের ভালোবাসা।
জ্বলেপুড়ে ছারখার,
স্বপ্নের খাজানার জীবন্ত মণিহার।
কম্পিত ঠোঁটে ঠোঁটে,
বারুদের গন্ধ।
এখনও যে আছে প্রান,
হয়নি যে বন্ধ।
মেঘদূত রামগিরি করে কতো গর্জন,
কখনও যে শুনি কানে কিছু কিছু তর্জন,
বারুদের আগুনেতে করেনি তো অর্জন।
হয়েও হলো না শেষ,
গিরি গুহা নদী যত।
পড়ে রবে তারই মাঝে,
শত শত মায়া কতো।
চৈত্রের চাতকের উড়ে যাওয়া সুরে,
মন যায় সুদূরে শুধু উড়ে উড়ে।
চৈত্রের পবনে গঞ্জের গাঁয়ে,
চুমু দিয়ে চায়ে,
ছুঁড়ে ফেলি ভাড়,
তার বুঝি আর,
নাহি দরকার।
বর্ষার রিমিঝিমি,
সা রে গা মা পা ধা নি সা,
সপ্তম এই সুর তালে,
বেঁচে আছি অল্প যে,
এই শেষ কালে।
মৃত্যুর হাতে শুধু রংরুট,
রবে না গো কোনো আজি,
দামি স্যুট বুট।
আধো আলো ছায়াতলে,
ঝরে যাবে সবই পাতা।
নয়নের আঁখি জলে,
চিতাতেই রবে গাঁথা।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
------------------------------------------------------
(৪) কবিতা : " এলিয়ান বলয়ে "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
চলো যাই চলো ওগো,
সুদূরের পানে।
যেখানে শান্তি ওগো,
খুশির বন্যা ডেকে আনে।
যেখানে কুঞ্জ বনে,
মধুকর ওড়ে শুধু মিলনের গানে।
আমি এক মনে,
গান শুনে যাই।
মুখরিত মন তাই,
পুলকিত হয়ে পাই।
মনে হয় দিন,
যত আছে সিন,
এই বুঝি হায়,
শুধু চলে যায়।
স্বপ্নের মোহ্ ক্ষণে,
গোধূলির গগণে,
আমি উড়ি মগনে।
সন্ধ্যার তাঁরা তুমি,
তুমি দীপ্ জ্বেলে,
কারে নিয়ে এলে,
মায়াবিনী লগ্নের এই মোহ্জালে।
শশীকলা এলো বুঝি,
দিলো তব নিজ আলো,
নিশি মহাকালে।
ক্লান্ত নিশি শীতল মলয়ে,
নাচিয়া ফিরিয়া আমারে ঘিরিয়া,
বাহুডোরে আছে আজি,
এলিয়ান বলয়ে।
জোনাকিরা উড়ে যায়,
আধো আলো ছায়াতে,
মায়াবিনী কায়াতে।
স্বপ্নের আঁখি দু'টি,
শুধু দ্যাখে চেয়ে।
মনে হয় ভিন গ্রহী,
কোনো গান গেয়ে।
থেমে যায় যাক্ না,
আজ সব কিছু।
চাঁদনীর রাত যেন,
ছাড়ে না গো পিছু।
হবে না গো স্বপ্ন,
কভু ওগো মিছে।
এলিয়ান পড়ে রবে,
মানবের পিছে।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
------------------------------------------------------
(৫) কবিতা : " সোনা মা "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
আমার ছোট্ট সোনা,
হয়ে গেলো মা।
ডাকি তারে আমি ওরে,
হৃদয়ের গহনে শুধু সোনা মা।
সুখের খোঁজে যাচ্ছে উড়ে,
দূর থেকে দূরে আরও বহুদূরে,
বলছে আমায় দূর হয়ে যা।
তবুও আমি রইবো পড়ে,
সোনা মা-র রাঙা চরণ ধরে।
তবুও আমি বলবো তারে,
সারাটা জীবন বারে বারে,
তুই তো আমার নয়নের মণি,
আমার প্রানের প্রেমের খনি।
সুখের খোঁজে স্বার্থ নিয়ে,
তুই যদি যাস যা,
হৃদয় ছুঁয়ে দূরে উড়ে।
আমি যেমন তেমন রবো পড়ে,
তোর স্মৃতি ঘিরে,
মিছে মায়ার স্বপ্ন ভিড়ে।
থাকে যদি থাকনা,
সবদিকে খালি ধূধূ।
দেখে যাবি উড়বো যে,
আমি শুধু শুধু,
তোরই নীল গগণে,
ফাগুনের আগুনে,
তোরই পীত্ মগণে।
ভুলতে কি পারবো,
স্মৃতি ঘিরে আছে যা ব্যথাতুর বেদনা।
তুমি তারে আর ওগো,
কোনো ছেদ কোরো না।
তুমি মম হৃদয়ের,
আজও আছো সোনা মা।
যাই যদি যাই মরে,
তবু আমি রবো পড়ে,
সোনা মা-র চরণ ধরে।
কালো রাত গেছে ঘুচে,
সবকিছু দিয়ে মুছে।
আয় ফিরে আয় ধীরে,
আমার কোলের নীড়ে।
দেখবি যে আমি শুধু,
সেই একই আছি,
হৃদয়ে যে তোর ,
কতো কাছাকাছি।
ডাকবি কি সেই নামে,
চেনা শুধু এক ডাকে,
স্মৃতি বিজড়িত হৃদয়ের ফাঁকে।
বলবি কি আয় মোরে,
আয় হনুমান,
আয় মোর মোটো।
হলো ভোর খোলো দ্বোর,
এবারে যে তুমি ওগো,
সোনা মা-র কোলে ওঠো।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
-----------------------------------------------------
(৬) কবিতা : " মনের দুয়ার "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
ব্যথিত বেদনার সাগরে কতো,
সাঁতার কেটেছি আমি।
জেনেও জানো না কেনো তুমি,
হে মোর অন্তর্যামী।
কখনও শুকনো সাগর,
ভরেছে নয়নের জলে জলে,
জানি না তো কোন ফলে,
হৃদয় শুকিয়ে হলো ফুটিফাটা,
ব্যথাতুর অজানা কান্নার তলে।
বেদনার বাঁশি তবু বেজে যায়,
জানা অজানার সুরে সুরে হায়।
বেণু বনে পাতা ঝরে,
কতো কিছু মনে পড়ে।
স্মৃতি বিজড়িত হৃদয়ের তলে,
কারা যেন কি যে বলে।
তাই শুনে চলি আমি,
দূর থেকে বহুদূরে,
কুয়াশায় ঘিরে কুয়াশার-ই সুরে।
ব্যথিত বেদনার বালুচরে,
হিল্লোলে হাঁটি আমি,
দু'টি আঁখি ভরে।
কাঙ্খিত নিরাশার নয়নের জলে,
কে যে মোরে ডেকে যায়,
নেশাতুর পিশাচিনী নিশাচর বলে।
বেদনার বাঁশি সুরে,
কেনো গেলো সব মরে,
জীবনের কাঙ্খিত যত সব ফল।
সব হলো পুড়ে শুধু ছারখার,
মোহমায়া জালে জড়াবো না আর,
খুলে দাও খুলে দাও মনের দুয়ার।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
------------------------------------------------------
(৭) কবিতা : " কুয়াশার সুর "
কবি : সঞ্জয় কর্মকার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
স্তব্ধ নিশির অন্ধ নেশা,
কলুষিত মনে লাগালো যে দিশা।
ব্যথিত ভোরের কুয়াশার সুর,
কম্পিত বাঁশি ঠোঁটে ছুটে যায় বহুদূর।
ঝরা ফুলে কতো আশা,
মরে যায় নিশি ভোরে,
পদতলে হাসি নিয়ে,
ব্যথাতুর গন্ধে।
কখনও বা যায় মরে,
সন্ধ্যার ফাগুনে,
বিষাক্ত আগুনে,
কোনো এক গগণে,
বেদনার মগণে,
নিরুপায় লগণে।
ভরে গেছে এ ভূবন,
মরে গেছে আজি ওগো,
বিষাক্ত নেশায় মাতোয়ারা হিয়া,
জ্বেলে নাহি কোনো দিয়া।
ভরে আছে ভাঙ্গা কূলে,
নীর ছাড়া কালো ফুলে।
বসন্ত গগণ নানা রঙে রাঙা,
ঋতুরাজ করে খেলা,
বয়ে যায় বেলা।
কোকিলেরা সুর তুলে,
লাগালো যে নব মেলা।
চলে গেলো ঋতুরাজ,
সবকিছু ঘেঁটে আজ।
[]*** সমাপ্ত *** সমাপ্ত *** সমাপ্ত ***[]
------------------------------------------------------