বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

বসন্তকথন

গত বসন্তের ধূম্র-ধূসরতার আকাশে কৃষ্ণচূড়ার আস্ফালন ঘোষণা করেছে-

বসন্তের আমৃত্যুলালিত প্রেমের ইস্তাহার!

রূক্ষতা মুছে গেছে কোকিলের কলতানে,সবুজ শাড়ির গায়ে পলাশের হেমফোঁরে।

পাতাঝড়ার পথ ধরে শ্রাবণ এসেছে বসন্তপুরুষের রূপকল্পে!

আমি সেই পথের প্রান্তরে ছিলাম বসে প্রার্থনাতে ,

দীর্ঘ এক শতাব্দীর প্রতি বসন্তে কাঙ্খিত মৃত্যুর আহ্বান পেতে।

তারেই যে চেয়েছিলাম বারেবারে জীবনের ব্যর্থতার গল্পের প্রতিটি পরতে।

ক্লান্ত তন, তৃষিত চেতন, বিধ্বস্ত মন পারছিলনা সইতে আর,

তাইতো চাইছিল চিরসত্য মৃত্যুকে বারম্বার।

কিন্তু আকাশবাণীর বেশে কয়ে গেল শ্রীরাধাকৃষ্ণের ময়ূরপালক-

আসবে সে আসবে,সময় হয়েছে, অপেক্ষা ফুরিয়েছে,

রাঙিয়ে দেবে চিরতরে আত্মারে নব প্রাণের জোয়ারে 

কভু না মোছা আবিরের অনুরাগে,

ভালোবাসার প্রেমছোঁয়ায় তার 'আপন' করে।

বিস্মিত মন মানতে নাহি চাইল রূপকথার সে কথন,

আবারো সে মৃত্যুরে সাধিল।

নাঃ! মৃত্যু যে তারে ত্যাগিল!

আকাশবাণী দিয়েছিল যার আগমনীবার্তা-

জ্যোতির্ময় সে পরম স্নেহে নিজ বক্ষে জড়িয়ে নিয়ে,

লালিমার ভালোবাসার মুঠোভরা আবিরে রাঙিয়ে যে দিল।

কাঁপিল তন,শিহরিত হল মনন,চক্ষুজোড়া বুজে যে এলো;

আর তৃষিত চেতনে গভীর চুম্বনে অন্তরাত্মা প্রাণস্ফুরণ পেল।

কানবালার সজ্জায় একটুকরো মেঘের ঝুমকো লাগিয়ে সেই জ্যোতির্ময় উঠল বলে-

বৃষ্টি তুমি আমার শুধু আর তো কারো নও,

শ্রাবণপুরুষ ব্যতীত তবে কেন মৃত্যুরে বারেবারে চাও ?

যুগের পর যুগ ধরে আমাতেই সূচিতা, আমাতেই সমাপ্তি, আমাতেই অন্তর্হিতা-

আমাতেই তুমি ওগো প্রাণপ্রিয়া,

আছো যে জুড়ে এই মেঘমল্লারের সুরহিয়া।

তবে নাও বসন্তের আগমনের এই লগনে বাঁধলাম তোমারে,

রাধাচূড়ার প্রেমীবাঁধনে মম বাহুডোরে;

 দেখি তো এবার কেমনে তুমি ভালোবাসায় মন্দবাসার খোঁজ করে,

 মৃত্যুরে চাহিয়া এ বন্ধন হতে পালাও!


পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু