বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

এলে না গোঁসাই


একদিন গান শোনাবে বলেছিল গোঁসাই ঠাকুর
বলেছিল, বুড়ি মা তুমি বড় হও
তোমাকেও কৃষ্ণনাম দেব কানে কানে,
দিনরাত স্মরণ করলে তারে
মুক্তি মেলে সংসারের মায়া থেকে।

"হরিবোল" বলে সেই যে খঞ্জনি বাজিয়ে
ঝোলাতে চাল আলু পয়সা নিত । তাতে কি সংসার চলে!
শুধালে গোঁসাই বলত, খেতে পেলেই তো চলে যায়।
না খেতে পেলেও চলে, তবে কৃষ্ণ নাম জুটিয়ে দেয়।

আমি ভারি রাগ করেছি গোঁসাই ঠাকুর
বুড়ির মাঠের ধারে সেই খেলা ফেলে এসে
কতক্ষণ, কতক্ষণ বসে রইলুম, তোমার পথ চেয়ে
তুমি প্রতিশ্রুতি ভাঙলে
তুমি এলে না আমায় কৃষ্ণনাম দিতে।

ঐ যে দূরে খালের ধারে শ্মশানে চিতা জ্বলছে
বলছে, বলহরি, হরিবোল, বলহরি, হরিবোল।
ওদের মন্ত্রটা তুমিই শিখিয়েছ না!
আমি পাড়ে, কলমীর লতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে রাগ কমালাম
একেবারে ক্ষান্ত হইনি। কাল ভোরের অপেক্ষায়।
মাথায় উড়ুনি জড়িয়ে কন্ঠে তুলসী কাঠির মালা পরে
গেরুয়া ধুতি আর ফতুয়ায় ঠিক আসবে জানি।
খঞ্জনি বাজিয়ে গাইবে,
"শুক বলে ওঠো সারি ঘুমায়োনা আর"
আমি তক্ষুণি উঠবো মানা করলেও উঠবো ধোঁয়া ওঠা ভোরে।

হেমন্তের পা ধোয়ানো শিশির ভেজা ঘাসে
কত অপেক্ষা করলাম, কই গোঁসাই ঠাকুর তুমি এলে না তো,
তোমার বুড়ি মা'কে কৃষ্ণনাম দিলে না কানে কানে!
ঐ শ্মশানের লোকগুলো কি করে জানলো তবে
বলহরি, হরিবোল, বলহরি হরিবোল। 

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু