বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

ঠিকানা ভুলে

ছায়ার কাহিনী

কতখানি  জায়গা জুড়ে 

এখনও ছায়া ফেলে

এই শরীর নামের কাঠামো।

নদীর পাশে অন্তর্জলি শেষে

যেমন ফিরে আসেন ভগবান।

পাড়ে জড়ো হওয়া দিশাহীন

কমরেডের নির্লজ্জ প্রার্থনার মত।

ওপরের প্রলেপ রং সজ্জা 

কিছু নেই বিশদে আর

প্রাণহীন নিস্পন্দ বড় ঘাস দণ্ডে

চারিপাশে লেপটে থাকা জম্বির মত। 

বাঘ বন্দি খেলার শেষে, মাত্র

ছায়া নিয়ে পথ হাঁটি নিরুদ্দেশ

নগ্ন চরণে ভগ্ন হৃদয়ে, পাপ ক্ষয় করি

জ্যা- মুক্ত তীরের গভীর অপেক্ষায়।।

২৬.৪.২৩, বরাহনগর।



প্রোটোপ্লাজম


তারাদের রাজ্যে আমার

প্রবেশেধিকার নেই

চাঁদের মাটিতে নামতে 

পারা সহজ নয়

পৃথিবীর ধুলিকণারা

এখন আর মিশুকে নয় 

সেই থেকে আমি কেবলই 

ভাসমান, বায়বিয় প্রোটোপ্লাজম

জন্মান্তরের খোঁজে

দিয়েছি মহাকাশ পাড়ি।

হয়ত মাতৃ জঠর কোন

প্রতীক্ষার যতনে আছে স্থির বিদ্যমান

বৃহষ্পতির ঘূর্ণমান ঝড়ের বলয়ে।।

কুঁদঘাট, ১৭/৩/২৩




উলের মোজা


জীবন নামী শেয়ার বাজার

হেঁট মুন্ডু, বোজা চোখ

মধ্য মেধার, সাবেকি লোক

আকাশ ছিল, এক স্বপ্ন দেখার

অলীক বাবু এখন বেকার

জীবন শুধুই উলটো সোজা?

দুটি কাঁটায় কি বোনা মোজা?

নিয়ম গুলি ব্যাঁকা সরল

অমৃত যে হয় কখন গরল

ভালোবাসা, মিথ্যে বড়

ধন্ধে ঘোরায়, কাজে দড়

মূল্য ছিল, যা এক প্রাচীন

এখন ফাঁকা, মূল্যহীন।।




শব্দেরা অনুচ্চারিত কিন্তু বাঙ্ময়!


এই মনের, সব কথারা শব্দ হয় না- বহু চেষ্টাতেও

অতি সাধারণ জীবন,চাইলেও আর বিশেষ হবে না

অনেক ভুল ছিল, যা না ঘটার রাস্তা ছিল নিশ্চয়

ভুল এক মস্ত ব্ল্যাক হোল - আলোর গতিপথও বাঁকিয়ে দেয়

সে তুলনায় তুষ্টি খুঁজি না, শেষের পথে সাথী রয় না কেউ

দুর্যোধনও শুয়ে থাকেন কুরুক্ষেত্র কিনারে ভগ্ন উরু নিয়ে

আমি তো নেহাত তুচ্ছ মানুষ, হয়ত বড় বেশিই নরম

স্বপ্নেরা হারিয়ে গেছে কখন নিঃশব্দে, লক্ষ্য ছিল না বিশেষ

চলার পথে যারা আঙুল থেকে হাত অবধি ধরেছিল একদিন

অভিমানে ফিরে গেছে, আপন কোরকে বা মৃত্যুর বাহানায় 

আলেকজান্ডার নই,

 তবুও হাত খুলেই যাব, ফুরোন বেলায়

মনের সব কথারা শব্দ হয় না, বলে ওঠা যায় না

মনের সব কথারা শব্দ হয় না, লিখে ফেলা হয় না

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াবে যখন, হয়তো

আকাশ কাঁপাবে নিঃস্বতার হাহাকারে

এক পশলা বৃষ্টি শেষ, অলস আলপনায় এঁকে যাবে

নিরর্থক আফশোস আর ভুল বোঝার বহমান নির্ঝর।

খুঁজে দেখো, যদি বেছে নিয়ে তুলে নিতে পার

সেই না বলা শব্দেরে, একবার-

প্রয়োজন? না, কিছুমাত্র নেই।

বরানগর, ১৩/১০/২২



লিফাফা


বাকি থাকা জীবনের খাতায়

ছেড়ে গেছে সবই একে একে

কথা নেই, গান নেই, হাসি নেই

ধিক ধিক্কারে বেচারা জীবন

খুঁজে না পায় পালাবার পথ।

পথ বানাবেন যেই জন

সে জন মনের ভাব জানে না?

পীড়ারা উদ্যত গোপনে

শুধু সময়ের অপেক্ষা করে,

হয়তো বা নিয়তির দিন ক্ষণ।

আমি তো প্রস্তুত সেই থেকে সেজে

যখন পাপের হাতে লেগে ছিল মাতৃ হত্যার রং

আমি তো মেনেছি সবই, তারো পরে

অনিচ্ছায় কৃত বিশ্বাসের কাঁচ ভেঙে

চুর হয়েছিল নিঃশব্দ হতাশ আওয়াজে।

এখন শুধুই ঘৃণার সবুজ তরল

সমস্ত কঙ্কাল গেছে পচে গলে

শব্দেরা তবুও ব্যাকুল হৃদয়ে

সন্ধ্যার ঘন্টা শুণে নিজেকে গুছিয়ে নেয়

মৃত্যুর কাগজ হয়ত এই শীতে আসবে না।

আরো ক'টা দিন পাওয়া বোনাসে দিনভোর

মনকে পড়িও কেবল স্থির একটি মাত্র

অপেক্ষায়, তৈরী হতে, যে কোন দিন

সূর্যের চেনা পথ বেয়ে আসবেই যেন

বসন্তের পোস্ট ম্যান, হলুদ লিফাফা, ব্যাগে।।

১০/৯/২২, বরানগর




ঈশ্বরের কলেবর


ঈশ্বর যে পথে নিত্য করেন যাওয়া-আসা

সাথে নিয়ে যেতে চান তার সকল সন্তানেরে

মায়ার বায়োস্কোপ দেখে, চপলা আতুর হই

মুছে দিই লব্ধ পথের আপন আলপনা।

অসীম শূণ্যতার গহবরে অজানা ঘুরপাকে

ঝুলে আছি আজ লক্ষ বছরের পার

সম্ভমামি যুগে যুগের, বিশ্বাস মাত্র সম্বল

হাজার রক্তের বয়ে যাওয়া উত্তাল স্রোতে

ভালবাসার কুশখানি অঙ্গুরিয় ধারণে

আজও খোঁজে পথ, স্বর্গের ঈশ্বর এই নরদেহে ।।

৩০-শে মার্চ, ২০২২, বরানগর










ভারী আমি


এখন আমি অনেক দূরের কায়া

দেওয়াল তফাতে বেঁচে থাকা

কথার সাথে মন পারে কি

বিভাজনের বিভাজ্যতে?

ক্ষতির কোন দাগ পরে না মাটিতে

সীতার মতই লুকিয়ে থাকে

ধরিত্রী বুকে,পরীক্ষার শেষে।

জনকেরা আজ হারিয়ে গেছে

তবু থাকেন রামচন্দর প্রজার মাঝে

আমি চন্ডাল শেষ গুহক কুলে

তুচ্ছ প্রাণ, নির্গুন জীবন

খুঁজে ফিরি নীল কিংবা নল

আকাশ্চুম্বী দেওয়াল হব পার, স্বপ্ন শুধু।

আর একটি রামের সেতু কে বানাবে!?

৩০-শে এপ্রিল, ২০২২, বরানগর








যাবার আগে


এখানে বন্ধুর পথ, ক্রমে শেষ হয়ে এল।

সমুখে যে পথ বিছানো, সবটুকু লুকানো,

তা কি ছায়াময়, ফুটে থাকা ফুলে সুবাসিত

অথবা, আরোও কঠিন, যাতনায় কুশল!


সূর্যের তৃতীয় গ্রহে,একদা ছিল যে আবাস

অশরিরী ইথারিয় আত্মা রাখিবে কি মনে?

সময়ের ভাসমান তরণী দীর্ঘ পথ বেয়ে,

ফিরাবে কি সে আমায়, নতুন জীবনে?


কেন আসি,কেন যাই, বুঝি নি,যদিও!

জন্মিতে তথাপি চাই, প্রায়শ্চিত্ত বাকি।

উদ্দেশ্য বিধেয়, যা কিছু অধরা ছায়া,

হয়তো খুলে যাবে,আগামী এক মৃত্যুর পথে।।

৩-রা জুন, ২০২২, বরানগর






ব্যর্থ জীবন


সময়ের কারচুপি চেয়ে দেখি --

এগিয়ে চলা, কি আসলে পেছানো নয়?

ক্যালেন্ডারে বদলায় তারিখ,

তবু জন্মদিন পেছোতে থাকে

কাঠের ধোঁয়ায় খুকখুকে বুকে

পদধ্বনি এগোতে থাকে

টুপ করে এখনই পড়বে ঝরে

সেই ফুলটি, যার পরাগে ফল ধরেনি।

বীজ খুঁজে পেতে আরো হাজার জীবন

পার করে, হয়তো বা আবার নতুন বৃক্ষ রোপণ!

১-লা মার্চ, ২০২১, আমেদাবাদ







খোঁজ


নিকটের সম্বোধনেরা হৃদয়ের শেষ কক্ষে

লুকায়েছে পরিচয়

দিনে দিনে শোণিতের যাওয়া আসা কমে আসে বন্ধুর সে পথে

প্রাণের ভিতরে একদা যা ছিল ছাপ সন্দেশের মত পিঠোপিঠি

এখন মরমের আস্তরণ উপছিয়া উঠে নোনা সাগরের জলবিন্দু রূপে

ইসিজি আর রং করা ডপলার হৃদয়ের স্বাস্থ্য সাজায় নিঁখুত ক্যানভাসে

তবু কেন রাত দিন ব্যাথারা প্রহরের ঘন্টা বাজায়

বদলে দেয় ছবির রঙ ঢঙ এলোমেলো করে

সব মিলে এ ভাবেই জুড়ে থাকে তারা

মরা জীবনের স্রোতে।

৩১-শে জানুয়ারি, ২০২১, আমেদাবাদ








হিম যুগ শেষে


পারমাফ্রস্টের তুষার শীতল দ্রবনের নীচ থেকে

ভেসে ওঠে প্রাচীন ক্ষতের মমি কাপড়

চুঁইয়ে আসা রক্তের লাল ধারায় জীবনের ব্যাথা।

বিশল্যকরণী লাগেনি কাজে

প্রয়োজন ছিল না পাথর ভাঙার

শুধু দুটো কথা কানের কুহরে প্রবেশের ছিল যাচনা

আমি আছি তোমারই পাশে, হাতে হাত রেখে

নিবিড় নিশ্বাসে।

৩১-শে জানুয়ারি, ২০২১,আমেদাবাদ









অস্থির মন


আগুনের কাছাকাছি হব

সময় হয়ে আসছে।

ছিন্নমূল উৎপাটিত দ্রুম ন্যায়

অপেক্ষায় থাক মন, সমর্পনে

বীজ তুমি জমা কোর নাই

কর্ম সকলই ব্যার্থ নিরর্থক

সাধনার আলো পড়ে নাই শিরো'পর

কলিযুগে ভক্তের নাম অবহেলিত

তবু আমি বেঁচে আছি ঈশ্বর লালিত।।

১-লা জানুয়ারি, ২০২১, আমেদাবাদ






শরশয্যা


কবে যেন অনেকটা দূরে

এসে গেছি, হেলায় ফেলায়

জানি, তবু বুঝি হয়তো বা

মনের কথার দায় থেকে যায়।

শরীর যবে বোবা হল

হাতের পরশ মুছেই গেল

বাণীরা আসে বাঁধন বিহীন

তুনীর খোলা, যুদ্ধ অমলিন

শরশয্যা, নিত্য রক্ত দান,আজ

ইচ্ছামৃত্যু রাখে না কথার মান

যাবার পথে চিহ্ন রেখে যেতে

অভিমানী হৃদয়খানি যাব পেতে!

১৩-ই জুন, ২০২১, আমেদাবাদ








অচেনা পথ


যে পথে চলেছি এখন

বহু পুরাতন সে যে

দু- পাশে তার সার দেওয়া

সময়ের চলমান ঠিকুজি

এরই মাঝে কোথাও কোন কোণে

মোর জন্মপত্রিকা নগন্য অতি

হলুদ গোটানো কাগজে

রাহু শণির লেখা জোখা

সকলি করেছি ব্যার্থ

জীবনের নামে

যতদিন শ্বাস চলেছে।

*******

এখন মৃতবৎ রয়েছি

না গৃহ না সন্ন্যাস

বিকৃত নীচ জান্তব রূপে

অপেক্ষায় অশান্ত

শ্রীরামকৃষ্ণ চরণে।

৭-ই জুলাই, ২০২১, আমেদাবাদ





বাইশের সাত


জামাতে পকেট ছিল না কখনও

টাকা পয়সা খুচরো বা রসিদ

কিছুই থাকেনা টুকরো কাপড়ের আড়ালে

ভীরু হাতে লুকানো চিঠিতে কেবল

আজ তারিখ বাইশে জুলাই

অঙ্কের সুব্রত স্যার বলেন বাইশের সাত

প্রাচীন গ্রীকেরা বলে 'পাই'

তিন দশমিক এক চারের থেকেও

বিরাট সংখ্যা এই বাইশের সাত

একটি দিন একটি তারিখ আসে

আর যায় সময়ের সারণী বেয়ে

ফেলে আসা প্রতি পল, দ্বিধা

ভরা কাঁপা হাত, ভালোবেসে ভয়ে


বাইশের পাশা চলে নিয়তির চালে

শ্রাবণ নেমেছিল প্লাবনের ন্যায়

দু-কুল ছাপিয়ে, দুই নদী মিলেছিল

মেঘ নহে, প্রেমঝর্ণার অবাধ ধারায়


বাইশের সাত আয়না দেখায়

দেখায় ফেলে আসা পথের যোজন

সাতের বাইশ আজও নিত্য

অনুভবে এক মানিক রতন।

২২-শে জুলাই, ২০২১, আমেদাবাদ






ভালোবাসি, তাই


যদি প্রেম নাহি জাগে হৃদয়ে

ক্ষতি নাহি তারে

তব ছায়া যেন বিরাজে মোর

অদেখা তনুর তীরে।।


যদি প্রেম নাহি মোরে দিবে

ক্ষতি নাহি মোটে

বাসিব তোমার নামখানি মাত্র

লইয়া আপন ঠোঁটে।।


যদি ভুলিবারে কর হে বাসনা

বাধ সাধিব না

আমারে ভুলিও হে নিশ্চয়

আমি ভুলিব না।।


যখন করিবে যাত্রা এ পথের শেষে

যাচিব তোমার সঙ্গ মধুর

হাসিয়া ত্যাজিব তুচ্ছ এ প্রাণ

সহিব না কভু বিরহ বিধুর।।

১-লা আগস্ট,২০২১,আমেদাবাদ







চোখ


যে চোখের ভ্রু বিন্যাস

আয়নায় পড়ে না ধরা

যে চোখের দৃষ্টির সরণ

খুলে দেয় শুধু অন্ধকারের পথ

যে চোখের মুগ্ধতা

কেউ কখনও দেখে না ভুলেও

যে চোখের পাতায়

ঘুম আসে না বিশ্রামের পরেও

সেই চোখে শুধু

ভেসে ভেসে থাকে

মানুষের ছায়া অবয়ব

সেই চোখে আলোর ফোটনেরা

ধাক্কা খেয়ে ফিরে যায়

অনন্ত অসীমে

সেই চোখের কোণে

ভুলে যাওয়া এক মুখ ধরা দেয়

কচ্চিত ছায়াময়, মায়াময়।

তবু সেই চোখকে ফেলে দিতে পারিনি

এখনও যে সে কান্নার জল যোগায়।।


১৭-ই আগস্ট, কলকাতা, কুদঘাট







কবিতা তুমি


আরব সাগরের ঢেউ এর মত

জীবনপাত্রের মাধুরী অথৈ জলে

কবিতারা মিশে থাকে যেন

সাগরের অদৃশ্য লবণের মত।


দিনভর নিত্য রোজনামচায়

কত কথা বলা হয়ে যায়

টুকরো গদ্যের হীরক খন্ড মধ্যে

কবিতা লুকিয়ে থাকে তরলের প্রায়।


দুঃখের হাত ধরে ব্যাথার প্রবেশে

অসহ্য হারানোর নিদারুন শোকে

সে লুকানো তরল কেলাসিত হয়

স্বাদু, জমাট, কবিতার স্ফটিকে।


হয়ত সঙ্গীত রূপে ভৈরবীর তানে

জমা হয় কবির কণ্ঠপ্রদেশে

কবিতার অনভ্যাস অনুপস্থিতি

জীবন জোয়ারে শুধু ভাঁটা নিয়ে আসে।

সুখ যাক, দুঃখ ফিরুক বারে বারে

কবিতা থাকুক অদৃশ্য লবণের ন্যায়

মন ভরে যাক নোনা স্বাদের ফেনায়

যুক্ত করে সম্ভাষণ করি, বিজয়ী মোর কবিতায়।


৩-রা সেপ্টেম্বর,২০২১, আমেদাবাদ







যীশুর প্রার্থনা


কলকাতার যীশুরা আর ঘোরে না ময়দানে

এখন তাদের ঘোরাফেরা, নগ্ন বিবেক আফগানে

বোমানের ধুলিগত বুদ্ধের পাদদেশে বসি

সে, একই ক্ষমা যাচনায়, এখনও উচ্চকিত

পেরেকে বিঁধে থাকা হাত দুখানি গিয়াছে খসি।।


দ্বাপরের শেষে, কলির অনন্ত প্রকোপে

ক্ষমার আগমন ঘটে গেল একে একে

বুদ্ধ, যীশু, চৈতন্য আর কবীরের অবতার

সব পাপ, সব রক্ত সব যাতনা যতনে ঢেকে


গোপনে লুকালো হাসি ধরার বিসর্জিতা সীতা

রামেরই রাজ্য চাহি, ফেলেছে রামেরে হারায়ে

গোকুলের কোন গৃহে, শেষ ভগবান জাগিছে সমাধি শেষে?

নোয়ার তরীখানি আশার সে ছলনে এখনও যে তাই ভাসে

শেষের সে দিন কি সমাগত প্রায়,ক্ষমাহীন বিনাশের শেষে?


৩-রা সেপ্টেম্বর,২০২১, আমেদাবাদ








এখনও আমি.....


প্রতি রাতের শয়ন আঁধারে

ভেসে থাকে প্রচ্ছন্ন আভাষ

আলোকের পুণঃ প্রকাশে

এ দেহ কি জাগিবে আবার!


আবর্ত্তের পাকদন্ডী নিত্য বহমান

আমার আমিত্ব সেথা ছিন্নতৃণ সমান

আসিয়াছি যথা, বিদায় অনিবার্য

নিকট বা অদূর, তা যে নিয়তির ধার্য্য


ভালো হওয়া, ভাল কাজ- সহজ কঠিন

চেতনার পথ বন্ধুর, অপার

কর্ম,জ্ঞান,সাধনা সকলই অস্থির মতি

সমর্পনে শান্তি আস্থায় টানি তাই যতি।।


২২-শে ডিসেম্বর, ২০২০, আমেদাবাদ










নিয়তি


দেখিতে পাই না তবু

ব্যাথা দিয়ে যাও

ভোলনি কি মোর

নিয়তির পথ চলাও

মুহুর্তের নাটিকার সব প্রস্তুতি

পিয়ানো বোতামের মত ছিল সাজানো

কুশীলবেরা অধিষ্ঠিত স্ব স্ব আসনে

তোমার মঞ্চে আগমন সকলের শেষে

তারপর, কেবল যবনিকা পতন


৬-ই ডিসেম্বর, ২০২০, আমেদাবাদ









ঘুম দেব


দিনের বেশিটুকু ঘুমিয়ে থাকি

সময় আছে, আর সুযোগ নেই

যে যখন তখন তোমায় ডাকি।

ঘুমের ভিতর দিন আর রাত

কালো সাদায় হয় মোলাকাত;

তাদের সাথে, পিছন পথে সেই যে তারা

গেছেন রেখে, মুসাফিরের সরাই ছাড়া,

তাদের চোখে আশার কিরণ

ঘুমের মাঝেও অগাধ স্মরণ।

ঘুমিয়ে পড়ার আসছে সময়-

মুঠির পেশি আলগা বলয়

সকল নিশি পোহায় কি আর

ভোরের বেলায় আলোয় আলোয়?


২৩-শে সেপ্টেম্বর, ২০২০, আমেদাবাদ





একা


এক জখমে মানুষ মরে না

যেমন এক মাঘে যায় না শীত

তবুও ঘুঘুরা বারে বারে ধান খেতে আসে

নির্লজ্জ সাবেক ছাপোষার মত ফিরে

এই জগতে সকলেই অভ্যাসের পা-চাটা

নতুন আনকোরা ইচ্ছের স্বপ্নেরা

অবহেলার চড় খেয়ে গাল বেয়ে ফোঁটা হয়ে যায়

যদিও সে মানুষ মরে না, নীল হয়ে যায় তার রং

পুরোনো বা তাজা, জখমের জামা গায়ে দিয়ে

খুঁজেই বেড়ায়, সব পেয়েছির আসরের দেশ

যতদিন না সে জানতে পারে

আসলে এই জগত সংসারে নিয্যস একা।


১৬-ই সেপ্টেম্বর, ২০২০, আমেদাবাদ






দুরাশা


যৌবনে উষ্ণতার ভাগাভাগি ছিল

এখন শৈত্যের ভাগীদার নাই

তবু বসন্তের আশায় বুক ওঠে নামে

পথ জুড়ে থাকে অস্বচ্ছ দৃষ্টির চমক

জীবন বড়ই মায়াবী পুতুল

নিরাশার মরুভূমির দিক চক্রবালে

ভরোসার সবুজ মরুদ্যান দুলিয়ে ভোলায়

হাপরের শেষ প্রক্ষেপন অগ্নি কুন্ডে

তোলে অজস্র আলোক স্ফুলিঙ্গ

খসে যাওয়া তারার মত।


১৫-ই সেপ্টেম্বর, ২০২০, আমেদাবাদ








पता नहीं 


जाना कितना दुर है मालूम नही

दूंरिया काटेगी कि भी मालूम नही

वस इतना मालूम हो चला

मंजिल कोई पास नही।

अभी तो कोइ बार आना बाकि हैं

अभी तो कोइ बार मरना बाकि हैं

वस इतना मालूम हो चला

मंजिल कोई पास नही।

रास्ते ढुंढना आसान होगी

तूं अगर साथ दे दे मेरे योगी।।


২৮-শে আগস্ট, ২০২০, আমেদাবাদ










Obsession or life


O common man common man

What's your character?

You thought it otherwise, but

Told, it is nothing but obsession


You run ur life by obsession

In all ur sins, wrongdos or passions

Can't poise for any celebration,

Destiny falls apart around ur notion.


You live or U leave - nothing changes emotion

Common man comes and leaves

Life does all the tricks

Brand  you in the name of obsession


১৪-ই জুলাই,২০২০, আমেদাবাদ






সময়


চলার পথ লম্বা কখন

ফুট পেরিয়ে মাইল হয়

আমি যখন আমরা ছাড়ি

বাসা ভেঙে ঘর হয়

ঘুম আসেনা স্বপ্ন উধাও

জমাট আঁধার দেয়াল বানায়

রাত বিছানার এই কয়েদখানায়

আনারকলির হিজাব পরায়

তবুও তো পথ পড়েই থাকে

ফুরোবে কি সে ঘুমের আগে?

দাগের সুতো ছোঁয়া যাবে?

মাইল আবার ফুট কি হবে!

আমরা নেই, ছিলাম কিন্তু

কোনটা ঠিক কোনটা ফালতু?

সময় যেদিন সওয়ার হবে

সেই কথাটা কি জানা যাবে?


২৬-শে জানুয়ারি,২০২০









অপেক্ষা


ছুঁয়ে থাকা শরীর এখন

নিউটনীয় তৃতীয় সূত্রের পতন

জ্বর জ্বর লাগেনা, তালু ঠেকে না শুষ্ক জিহবা

নরম মাংসেরা কঠিন হয় না জেগে

দাঁতের পাটির ফাঁকে প্রগাঢ় থাকে না ওষ্ঠ।

এখন আলিঙ্গন শুধু জড়ায়ে থাকার

যথা মানিপ্ল্যান্ট লতায়ে থাকে নিমের শরীরে।

পরস্পরের বোঝাপড়া এখন ঐকিক নিয়মে

মানেরা হারিয়েছে অভিমানের জানালা টপকে

যাহা গেছে ফিরিবে না, তবু তুমি আছ আমি আছি।

শেষ মঞ্চ, করতালি কিংবা উপেক্ষার ভিড়

কালের যবনিকা নামিবে এখন কিম্বা তখন

জীবন ঘুরিবে চক্র জীবনেরই সাথে

আগামীর অজানায় সময়ের পথে

এসো দোঁহে চেয়ে থাকি সেই আসন্ন তিমিরে।


২৯-শে জানুয়ারি, ২০১৭, আমেদাবাদ






রথযাত্রা


আজি তোমার রথের রশি লব না হাতে তুলি,

কলিজা ভরা বাতাসিয়া জোর দিব না চাকায়

আজি মোরা  ঠুঁটো সবে তোমারই সমান

হেঁট মস্তক আর ক্ষুধার্ত পেটের

দুটি চোখের মানব সন্তান।

মাল্য চাদর, ফুলের স্তুপ সরায়ে দেখ

পদক্ষেপের রাস্তার কি অকিঞ্চন

চারিধারে অন্ধ মানুষ, দিশাহীন

নিজেরই ছায়া সাথে করিছে রোদন।

ত্রস্ত জগত, ভঙ্গুর সমাজ

আপনার ব্যাবহারে আপনি নিলাজ।

রাজপথে ছুঁড়ে ফেলে জীবন্ত নারী মাংসপিন্ড

মোমের আড়ালে লুক্কায়িত নিজ

সুখী ঘর, লজ্জাহীন সকল হৃদিখন্ড।

বলহীন, বীর্য্যহীন, হীন মনোবল

কাহারে পূজিবে এবে কহ দেখি নাথ

রাজরক্ত কলুষিত, মিথ্যা করে আশা

আপামরে না জাগালে, মিছে রথে বসা।

মানব দেবতারে অধিষ্ঠানে দাও অনুমতি

তুমি আসি সম্মুখে দাঁড়াও, হও আজি সারথী

উড়াও শকট, বিদ্যুতের তেজে, নতুনের পথে

নির্বাপিত কর হিংসা আর ক্ষমতার দ্বৈরথে।

গুন্ডিচা মাত্র নহে, ঠিকানা মোদের আর

তোমা সাথে খুঁজে নেব বৈকুন্ঠের দুয়ার।


২৪-শে জানুয়ারি, ২০১৭, আমেদাবাদ








// জনমেজেয়-র শেষ যাত্রা //


চার দেওয়ালের সমকোণ পরিণিতি আর নেই

আলগা হয়েছে তার আগলে ধরার হাত ।

ভেঙেছে মন আজ, যেমন ভাঙে ঢেউয়ে ঘেরা খেয়ার হাল

চার কোণে সরে সরে যাওয়া চার দেয়ালের সাথ ।।

নিবের গভীরে ফাটল কখনো পড়ে নি তো চোখে

আসে নি কোন বাচাউ গ্রাসী অকাল ভূমিকম্প ।

তবুও দেয়ালের পঞ্জরে ভালোবাসার পলেস্তারা সরে গেছে

রাস্তা দিয়েছে অন্ধ অবজ্ঞার ঘূণ পোকাকে ধীরে

গেরুয়া রঙ এর গুঁড়ো হওয়া ইটের পাউডারে

আলগা করেছে বাঁধ সম্পর্কের নীড়ে ।।

জানালার দেয়াল হয় নি কখনো খোলা

অবকাশ চলে গেছে আত্ম সুখে, সময়ের পালে ।

শিশু চারা কবে যেন বৃক্ষ হয়েছে চোখের অগোচরে

জানালার হাতে চোখেরই জল ফেলা ।।

রাজনীতির দেওয়ালে লেখা বোঝা যায়

সম্পর্কের কাঁপা কাঁপা দেওয়ালে, লেখাগুলি রক্তাত্ত তীরের ফলায়

ক্রমে ক্রমে ধরাশায়ী করে অজেয় পান্ডবকুলে

জনমেজেয়-র উত্তর পুরুষ আমি, অসফল উদভ্রান্ত

কেশবের শিষ্য একা আমি আজ

হেঁট মুন্ড কাঁটার মুকুটে, ধিক্কারে সম্বোধিত,

বাঁচার মন্ত্র খুঁজি মহাপ্রস্থানে পথে

১৪.০৬.২০১০, গোরেগাঁও, মুম্বাই

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু