বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

আত্মঅহঙ্কার

নাম-   আত্মঅহঙ্কার


লেখক- ঋতুপর্ণা 



"আপনি অনন্যা বসু?"


অনন্যা তাকাতে ছেলেটি তার কান্নাভেজা, শঙ্কিত দৃষ্টিতে প্রশ্নচিহ্ন দেখে আবার বলে উঠল,


"ভয় পাবেন না। ফাঁকা মাঠে হঠাৎই চোখে পড়ল পার্সটা। পরিচয় জানার জন্য আপনার পার্স  খুলেছিলাম৷ মনে হয় কিছুই খোয়া যায় নি। রথের ভীড়ের চাপে পড়ে গিয়েছিল, আর লোকজনও খেয়াল করে নি৷ আচ্ছা, চলি। ভালো কথা ওই চোখে  জল কিন্তু মানাচ্ছে না। বরং কাজলটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওটা নষ্ট করবেন না।"


অনন্যা আর সুলেখাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে চলে গেল। সুলেখার গলা থেকে অস্ফুটে বেরিয়ে এল শুধু, "সুকমলদা কী হ্যান্ডসাম হয়েছে!"


আজ পনেরো বছর পরেও রথ এলেই অনন্যা সেই দিনটা নিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে যায়। ভীষণ কান্না পেয়ে যায় আবার, কিন্তু কাঁদতে পারে না। যদি কাজল নষ্ট হয়ে যায়। ওর কথা ভেবেই তো অনন্যা কাজল ছাড়া একমুহূর্তও পা ফেলে না বাইরে। 


রথের দিনই চারচোখের মিলন হয়েছিল, আবার রথের দিনই চারহাত এক হওয়ার আগেই বিচ্ছেদ হয়ে গেল। 


সেই গ্রামের স্কুল, ক্ষেতের কাজ এসব নিয়েই পড়ে থাকল সুকমল। প্রাইমারি স্কুলটাকে হাইস্কুল করে একটা স্বপ্ন ওর পূরণ হয়েছে। কিন্তু অনন্যা? তার কোনো মূল্য থাকল না?


সে নিজেও দোষী। সুকমল যেমন গ্রাম ছেড়ে আসতে চাইল না, তেমনই অনন্যাও তো শহর ছেড়ে গেল না সুকমলের কাছে কোনোদিন। 


অনন্যা শুধু এটাই বুঝেছে এতদিনে, দুজনের আত্মঅহঙ্কারই দুজনকে এক হতে দেয় নি।


                                            শব্দসংখ্যা- ১৯৯ 


পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু