লাল চুড়ি
পিঠে ব্যাগটা দুহাতে চেপে ধরে একদৌড়ে রাস্তা পার হয়ে তিন্নি । কোচিং আজ অনেকটা আগে ছুটি দিলো । সবার তাড়া , রথের মেলা চলছে যে । তিন্নি ফেরে বাড়ির রাস্তায় । মাথা নিচু করে রাস্তার নুড়িগুলো পা দিয়ে টিপ করে আরো এগিয়ে নিয়ে মনখারাপ চাপা দিতে চায় ।
মেলায় প্রতিবার তিন্নিকে ওর বাবাই নিয়ে যেতো । মাস সাতেক হলো একসিডেন্টে ওর বাবা মারা যায় ।
বাবার কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ পিছন থেকে সাইকেলের বেলের আওয়াজ । উদ্ভব ।
উদ্ভব ওর সাথে একই ক্লাসে পড়ে । ও জানায় সব বন্ধুরা তিন্নির অপেক্ষায় মাঝ রাস্তায় । যেতে নিমরাজি হলেও, উদ্ভব কিছুই শুনতে রাজি নয় ।
সাইকেলে জোর করেই তুলে নেয় তিন্নিকে । পৌঁছে দেখে বাকি বন্ধুরা কেউ কোথাও নেই । ' আগেই আগেই ওরা ' - বলে উদ্ভব এগিয়ে যায় । বাদাম , কুলফি নিয়ে আসে ওদের দুজনের জন্য । তিন্নি ভুলে যায় আরো বন্ধুদের খোঁজ । বেলুনের ট্রিগার মিস করলে উদ্ভব ওর গালের পাশে গাল রেখে আঙ্গুলে আঙ্গুল রাখে ।
ফিরতি পথে একগোছা লাল সোনালী চুড়ি দেয় তিন্নিকে ।
-- বলছি কটা বছর অপেক্ষা করবি ? সত্যি বলছি , আর কোনো বন্ধুর খোঁজ তোকে কখনো করতে হবে না ।
সারারাত তিন্নির ঘুম আসেনি। লাল সোনালী চুড়ি যে ওর ভীষণ মন নাড়িয়ে দিয়েছে ।।