বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

ইচ্ছেডানা

ইচ্ছেডানা / দীপিতা চ্যাটার্জী


ছুটির আমেজ। দিনটি ছিল এক রথের দিন। মঠ, তেলেভাজা, ফুলের মালা, রথ সাজানো , রথ টানা সব নিয়ে এক হৈ হৈ রব চারিদিকে। হঠাৎই কিছু পাখির কলতান কানে ভেসে এলো। এদিক ওদিক তাকিয়েও কিছু দেখতে পেলো না সৌমী। দোতলার জানলা দিয়ে নীচে তাকাতেই চোখ গেল ঋদ্ধিদের বাড়ির পাতকোতলা তে। ওখানেই চোখে পড়লো কিছু ছোট্ট ছোট্ট পাখি, যারা বড় সরো খাঁচাতে কিচিরমিচির করছে। দেখে খুব খুশী হলো সে। কৌতূহলী পায়ে একছুটে পৌঁছে গেল খাঁচার সামনে। খুব ভালোলাগলো পাখি গুলো কে, কেমন যেন বন্ধু হয়ে গেল ওরা সৌমীর। রোজ স্কুল যাওয়ার সময় আর ফিরতি পথেও ওদের সাথে  কত গল্প করতো। এইভাবে চললো বেশ কিছুদিন। ওদের সাথে কথা বলতে বলতে ছোট্ট মেয়েটি ওদের ভাষা বুঝতে শুরু করেছিল যেন। একদিন স্কুল থেকে ফিরে অভ্যেস বসত ওদের কাছে গিয়ে দেখে ওরা চুপচাপ। সৌমী একটু অবাক হয়ে যায়। নাম ধরে ডাকতেই খাঁচার সামনে এলো পাখিটা। চোখের দিকে তাকাতেই মনে হয়েছিল কিছু বলতে চায় সৌমী কে, জানি না সেদিন সেই ছোট্ট মেয়েটার কি হয়েছিল, সে পাখিটার চোখের দিকে তাকাতেই উপলব্ধি করেছিল, দুচোখের কোনে দুটো মুক্ত জলজল করছে । ছোট্ট পাখিটার চোখ দুটো কিছু বলতে চেয়েছিল তাকে। এক অজানা কষ্ট তাকে ঘিরে ধরলো। এভাবে কিছুক্ষন কাটানোর পর কিছু না ভেবেই সৌমী খাঁচা খুলে উড়িয়ে দিলো সেই ছোট্ট পাখি গুলোকে। মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি আর ভালোলাগা ছিল সেই মুহূর্তে। পাখিগুলো কে ডানা মেলে উড়তে দেখে খুব আনন্দ হয়েছিল তার। পরে সবাই জানতে পেরে খুব বকেছিল সৌমী কে। কিন্তু তার বাবার মুখে এক অন্যরকম ভালোলাগা ছিল , যা সবার চোখ এড়িয়ে সৌমীর চোখে পড়েছিল। সারাজীবন সে ভুলতে পারবে না।।

আজ সৌমী বড় হয়েছে, বিয়ে হয়ে চলে এসেছে প্রবাসে। এখনো সৌমীর জানলায় অনেক পাখি আসে রোজ, সৌমী খেতে দেয় কিছু না কিছু। খুব মনে পড়ে তার সেই দিনগুলোর কথা আর পাখিগুলোকে। অদ্ভুত প্রশান্তি নিয়ে হাতটা বাড়িয়ে দেয় তাদের দিকে।



পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু