বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

অপয়া

সালকিয়ার একটি সরু গলির ময্যে একটি একতলা ঘর আছে।ঘরটি দেখে মনে হয় যে অনেকবছরের পুরনো।রঙ ওঠা।তার সামনে সামান্য ঝোপ মত আছে।পাশে কোন আর মানুষের বসতি নেই।রমেশ হাঁ হয়ে তাকিয়ে রইল।ঘরটার দিক থেকে যেন  চোখ ফেরানো যাচ্ছে না।কি এমন টান? রমেশ কিছুতেই বুঝতে পারলো না।

ঘরটার কাঠামো অন্যান্য আর পাঁচটা ঘরের থেকে আলাদা।পেলেসতরা খসানো ,চিটচিটে্ হলুদ ।ঝুরঝুরে ইটের সারি।রমেশ কোলকাতার একটি স্কুলের অংকের স্যার্।এখানে বন্ধুর বাড়িতে ,ছুটি কাটাতে এসেছে।দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো,সে এবার তাড়াতাড়ি বাড়ির পথে পা চালালো।সে তো রাস্তায় হাটতে হাটতে এখানে চলে এসেছে।হঠাৎ তার কেমন  ভয় ভয় করে উঠল।

'কি রে ,আবার ফেরত এলি তুই?'

রমেশ অবাক হয়ে তাকালো।আওয়াজটা যে তার খুব কাছ থেকে এলো সেটা তার বুঝতে বাকি নেই।কিন্ত রাস্তায় তো কেউ নেই।তাহলে?

ঠিক তখুনি রাস্তার কুকুরগুলো ঘরটির সামনে একতালে চিৎকার করে উঠল।রমেশের এবার দৃঢ বিশ্বাস যে কোথাও কিছু খারাপ ঘটছে।

'ঘরটার সামনে এত কুকুর কেন? তারা কিসের দিকে আর্তনাদ করছে ? কি বোঝাতে চাইছে?'রমেশ ভেবে উঠতে পারছিল না।

তার কিছুক্ষন পরে রমেশ একদল নেকড়ের আওয়াজ পেল!খুব ভয়ংকর তার মধ্যেই দেখতে পেল একটা ম্লান মেয়েকে।ঠিক ঘরটার কোনের এক জানালায়।রমেশের দিকে ফ্যাল্ ফ্যাল্ করে তাকিয়ে!

রমেশ তাড়াতাড়ি পা চালানোর চেষ্ঠা করল।পুরো শরীর তার যেন অবশ হয়ে আসছে।ম্লান মেয়েটা তাকেঁ যেন ইশারা করে ডাকছে।সেই ডাকটা যেন কোন মতে সাধারণ ডাক নয়।মনের জোর বাড়িয়ে রমেশ শরীরের সব বল দিয়ে ছুটতে লাগল।

রমেশ পরেরদিন বেলাতে আবার সেখানে গেল।দেখল যে বছর চব্বিশের একটি মেয়ে ওই বাড়িতে থাকে।একলাই।বাড়ির জিনিসপত্র অনেকদিনের জং পড়া অগোছালো।মেয়েটি যেন আর পাঁচটা মেয়ের মতন নয়।এরপর রমেশ যা দেখল ,সেটাতে হাড. হীম হয়ে যাওয়ার উপায়।

দুপুর বাড়তেই ,মেয়েটির নখগুলো যেন লম্বা ,মোটা ,কোন দানোবের নখের মত হয়ে যাচ্ছে ।মুখ থেকে একরকম বিশ্রী গোঙানি বেরুচ্ছ ওর।আর তাতে পাড়ার কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করতে করতে তার পাশে দাঁড়ালো।গোল হয়ে।মেয়েটি তাদের একটাকে আদর করে তারপর তার গলাটি কামড়ে ধরল।নিমেশে পুরো গোটা কুকুরটাকে খেয়ে ফেলল ।মাংস ,হাড. গোঁড. সব!

রমেশের তা দেখে শরীর খারাপ হতে লাগল।রমেশ নিজের ছুটি আরো ছদিন বাড়িয়ে নিল।

অনেক কষঠ করে পাশের ঝুপডি. থেকে এক বুড়ো মানুষের কাছ থেকে জানতে পারল যে মেয়েটির নাম লতা।

'ওই মেয়েটি সুবিধের নয়,তাইতো ওই বাড়ির কাছে কেউ ঘেষে না।ওর ওপর শয়তানের ছায়া আছে।সবাই ওঁকে অপয়া মনে করে।ওর একভাবে তাকানো সব ছারখার করে দেয়!'

এই বলে বুড়ো দরজা সপাটে লাগিয়ে দিল।রমেশ আবার লতাকে দেখার জন্য উৎসাহিত হয়ে ওর ঘরে ঢুকলো।

'তুই রোজ এখানে আসিস তো,এবার মজা দেখ।'লতা খেকিয়ে উঠল।

'আমাকে ছেড়ে দাও।আমি তো তোমার কোন ক্ষতি করিনি'।রমেশ করুণ কন্ঠে উত্তর দিল।

'তোর এবার শেষ দেখে ছাড়ব !আমাকে শেষ করেছিস ,এর হিসেব তো তোকে চোকাতেই হবে।'

এই বলে লতা ,একটা বড় ইঁদুর যেটা চলে যাচ্ছিল তাকে খপাৎ করে ধরে নিজের নখ দিয়ে দুফালা করে,তারিয়ে তারিয়ে খেয়ে ফেলল তারপর তার লমশ হাত নিয়ে রমেশের দিকে ধেয়ে এল।তার নংরা চুল দিয়ে তার মুখটা পুরো ঢেকে যাচ্ছে।যে আলখাল্ল াটা পরেছে ,তাতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।

রমেশ আর পালাতে পারলো না।লতা তার ওপর চেপে .ধারালো নখ দিয়ে গলা কেটে রক্ত ক্ষুধার্তের মত খেতে খেতে বলল,'ওরা যখন আমায় পুড়িয়ে মারল ,তুই ও তো তাদের মধ্য ে সামিল ছিলি রে শয়তান।'

 

 

 

 

 

 

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু