বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

মুখোশের আড়ালে

                 মুখোশের আড়ালে

 


করোনার থাবা এবার কলকাতা শহরে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে বেশ । আক্রান্তের গ্রাফ নিজের রেকর্ড রোজ ভাঙছে নিজেই । প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত লকডাউন আগামীকাল বারোদিনে পড়তে চললেও করোনার ব্যাটে এখনও টপ ফর্মের বীরেন্দ্র শেহবাগের গনগনে উত্তাপ, হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা ।




 তবে আদর্শ গৃহবধূ শ্রেয়া কিন্তু নিজের পরিবারকে করোনার করালগ্রাস থেকে রক্ষা করতে দৃঢ় তৎপর । দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার পরদিন সেই যে বাড়ির মেইন গেটে তালা পড়েছে , আজ অবধি খোলা হয়নি একবারও । বেহুলার বাসর ঘরে যদিও বা সাপ গলবার ফাঁকটুকু থেকে থাকে, শ্রেয়ার বসতবাড়ির নিরাপত্তা করোনার অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে রীতিমতো নিশ্ছিদ্র । কিন্তু মাঝেমধ্যে মনে খটকা বাঁধছে একটাই --- লকডাউনের আগের দিন বিকেল অবধি রোজ নিয়ম করে দুবেলা এসে বাসন মেজে দিয়ে গেছে ওদের ঠিকা কাজের মাসি মালতী। শ্রেয়াদের অভিজাত পাড়ার ঠিক পাশের ঝুপড়িতেই বিধবা মাকে নিয়ে এক চিলতে খড়ের ঘরে বাস স্বামী পরিত্যক্তা মাঝবয়সী মেয়েটার । এলাকার দশটি উচ্চবিত্ত বাড়িতে বাসন মাজার কাজ করেই দিন গুজরান হয় ওদের মা-মেয়ের । 




এমনই এক বাড়িতে সম্প্রতি সুইডেন থেকে ফিরেছে গৃহকর্তার প্রবাসী সন্তান । ফিরেছে বলার চেয়ে বলা ভালো , পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে করোনার রোষানলে । পেশায় ডাক্তার ছেলেটি এলাকায় ছোট থেকেই পরিচিত মেধাবী ছাত্র রূপে । ডাক্তারি পড়া শেষ করে সেই যে প্লেন উড়ান নিল দমদম এয়ারপোর্টের সীমানা ছাড়িয়ে , তারপর এই ঘরে ফেরা প্রায় পাঁচ বছর পর । ঘটনাচক্রে, মালতী নিজেও সেই বাড়িতে কাজ করছে আজ দেখতে দেখতে হয়ে গেল বছর দশেক । এসব করোনা টরোনা নিয়ে এই কদিন আগে অবধিও সে জানত না কিছুই । দিন কুড়ি আগে শ্রেয়া বৌদির মুখে প্রথম নামটা শোনে মালতী । এদেশে আক্রান্তের সংখ্যা সেসময় দুই অঙ্কে পৌঁছয়নি । বৌদি মালতীকে বলে যে , এই রোগে গ্রামের পর গ্রাম নাকি উজাড় হতে বসেছে সুইডেনে ; মিত্তিরবাবুর ডাক্তার ছেলে তাই প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে এসেছেন নিজের দেশে । ওই বাড়িতে কাজে গেলে মালতীর মাধ্যমেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে গোটা এলাকায় । মারা যাবে অনেকে । সরকার নাকি ছেলেটাকে একা একটা ঘরে কোয়াটারিন না কিসের ভিতর বন্দি থাকতে বলেছে ! ওর দেহে নাকি রোগটা থাকলেও থাকতে পারে ।                                       





 মালতী পরদিন কাজে গিয়ে মিত্তিরবাবুকে সমস্তটা জানালে তিনি বিষয়টা ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তার ডাক্তার-পুত্র নিজের ছোটবেলার মালতী পিসির হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেয় চকচকে পাঁচটা গোলাপি নোট । এক সপ্তাহ দেখার পর অবশেষে লকডাউনের আগের রাতে মালতীর হাতে মাসের মাইনে ধরিয়ে তাকে পত্রপাঠ বিদেয় করে শ্রেয়া । কিন্তু তখন যে সাতদিন ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত, মনের খচখচানিটা তাই যাচ্ছে না কিছুতেই । মালতীর বেরোনোর পর থেকে তাদের বাড়ির বন্ধ তালা এখনও রয়ে গেছে সেই একইভাবে ।




 ছয় বছরের ছেলে রাতুল আর স্বামী অংশুকে নিয়ে শ্রেয়ার সাজানোগোছানো স্বর্গসুখের সংসার । মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদে অংশুর মোবাইলের ব্যবসাও এখন রীতিমতো বাড়বাড়ন্ত । সকাল-সন্ধ্যে নির্বিশেষে সারাদিনই উপচে পড়ছে কাস্টমারদের ভিড় । দশজন কর্মচারী নিয়েও খদ্দেরের চাপ সামলাতে নাভিশ্বাস দশা তার । লকডাউনের মাঝে একবার দোকান খোলার কথা স্ত্রীকে জানানোর সাথেসাথেই সেই যে চাবি আঁচলে উঠেছে; আজ অবধি নামেনি । ফলস্বরূপ, এগারো দিন টানা লকডাউনে 'লক্ষ্মী টেলিকম'ও ।                                          





 ঐক্য এবং সংহতির আবেশে দেশবাসীকে উদ্দীপ্ত করার উদ্দেশ্যে আজ ঠিক রাত নয় ঘটিকায় সকলকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করতে অনুরোধ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী । রাষ্ট্রনায়কের ঘোষণায় শ্রেয়ার উত্তেজনা এখন রীতিমতো তুঙ্গে । প্রধানমন্ত্রী কেবল মোমবাতি জ্বালানোর কথা বললেও সকাল হতে না হতেই চিলেকোঠায় পড়ে থাকা বাজি নিয়ে সে হাজির হয়েছে ছাদে --- আসলে রোদ দিয়ে পুরোনো তুবড়িকে একটু তাজা করার প্রয়াস আর কী ! ছোটো ছেলেটা টানা বারোদিন বাড়িতে বন্দি থেকে বিরক্ত হয়ে পড়েছে ভীষণ ।  প্রধানমন্ত্রীর কথা রাখার পাশাপাশি নিজের ছেলে রাতুলকে একটু আনন্দ দিতেই বাজিগুলো বের করল শ্রেয়া ।





 ঠিক রাত নটায় গোটা ছাদ প্রদীপের আলোকমালায় রাঙিয়ে আতশবাজির আনন্দে মেতে উঠল ওরা তিনজন । শুধু ওরাই নয়, আশেপাশের কয়েকটা বাড়ি থেকেও ফানুস উড়ল অচেনা উদ্দেশ্যের ঠিকানায় । সমস্ত বাজি শেষ করে সাড়ে নটা নাগাদ নীচে নামল শ্রেয়ারা ; তারপর ডিনার সেরে , ভূতের গল্প শুনিয়ে ছেলেকে ঘুম পাড়ানোর পর্ব সমাপ্ত করে নিজেদের শুতে শুতে রাত বারোটা ।




পরদিন সকালে ঘুম ভাঙল দুধওয়ালা মাধবের চিৎকারে । দোতলার বারান্দা থেকে ঝোলানো ব্যাগে এখন দুধের প্যাকেটটা রোজ রেখে দেয় মাধব আর তারপর সেটা দড়ি দিয়ে ওপরে তুলে ধুয়ে নেয় শ্রেয়া । মাধব চেঁচিয়ে বলল --- " বৌদি, দুধটা রেখে গেলাম। ও পাড়ার মালতীকে কাল রাতে অ্যাম্বুলেন্স তুলে নিয়ে গেছে । সাবধানে থাকবেন । আপনাদের বাড়িতেও তো কাজ করত, দেখেছি ।" বিছানা থেকে উঠে শ্রেয়া বারান্দায় পৌঁছনোর আগেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে গেল মাধব । " এটা তো হওয়ারই ছিল । অসুখ না হলে মিত্তিরবাবুর ছেলে কি আর এমনি এমনি দেশে ফিরেছে ?" --- মনে মনে বলল বছর পঁয়ত্রিশের মেয়েটা । ঘরে ফিরে বিগত কয়েকদিনের অভ্যেসমতোই স্বামী ও পুত্রের দেহে থার্মোমিটার বসাল উদ্বিগ্ন মুখে । নাহ ! ৯৮.২ থেকে পারদ এগোয়নি একচুলও । নিশ্চিন্ত শ্রেয়া পা বাড়াল রান্নাঘরে । ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল দশটা । রোজ রোজ একঘেঁয়ে খাবার খেতে খেতে জিভে যেন অরুচির চর পড়ে গেছে গোটা পরিবারের । দিন পনেরো আগে কেনা মাংসটা ফ্রিজ থেকে বের করে ম্যারিনেট করতে শুরু করল শ্রেয়া । চিকেন রেজালাটা জমিয়ে রাঁধতে হবে যে ...                             




 লাঞ্চ সেরেই ছুটির দুপুরে বাঙালির প্রিয়তম ডেস্টিনেশন ভাতঘুমের দেশে সপরিবারে পাড়ি জমাল ওরা তিনজন। পাঁচটা নাগাদ হঠাৎ ঘুম ভাঙল অংশুর খুশখুশে কাশির শব্দে । এ কাশি অংশুর নতুন নয় ! সিজন চেঞ্জে খুশখুশে কাশি আর গারগেলের গরম জল ওর চিরদিনের সঙ্গী । বরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এতক্ষণ বেশ নিশ্চিন্তই ছিল শ্রেয়া । কিন্তু রাত বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সেটাও । সাথে ছেলে রাতুলের গাও বেশ গরম ।        





 ঘড়ির কাঁটা বারোটা পেরিয়েছে অনেক আগেই । অংশুর শ্বাস আজ বন্ধ হয়ে আসছে, কথা যাচ্ছে জড়িয়ে । গায়ে যেন উনুনের আঁচ । পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শ্রেয়া ফোন করল নিজের বাপের বাড়িতে । ভাইয়ের পাঠানো অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বাড়ির ড্রইংরুম থেকে সোজা বেলেঘাটা আইডির আইসোলেশন ওয়ার্ড । পরীক্ষা করে দেখা গেল, গোটা পরিবারই করোনা পজিটিভ । শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে অংশুকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হলেও শ্রেয়া ও তার ছেলেকে রাখা হল নরমাল আইসোলেশন বেডে । পঁয়তাল্লিশের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো ডায়াবেটিস পেশেন্ট অংশুর যাবতীয় লড়াইয়ে যবনিকা নেমে এল তিনদিনেই, করোনা কেড়ে নিল আরও এক স্পন্দন । 





শ্রেয়াকে খবরটা জানানো হল দিন তিনেক পর । ততদিনে প্লাস্টিকে মোড়া অংশুর নিথর দেহ ছাই হয়ে ভেসে গেছে বাতাসে । শোনামাত্রই হাতের স্যালাইন খুলে বেড থেকে নামতে গেল শ্রেয়া; ডাক্তারবাবু পাশে রেডিই ছিলেন ঘুমের ইনজেকশন নিয়ে । পুশ করতে এক মুহুর্তও সময় নিলেন না তিনি । তারপর দফায় দফায় কাউন্সেলিং আর ঘুমের ওষুধে শেষ আটদিনে বাস্তবকে অনেকটাই মেনে নিতে পেরেছে সদ্য বিধবা মেয়েটা । ছোট্ট রাতুল অবশ্য টানা চোদ্দোদিন ধরে বাবার আদর না পেয়ে অধৈর্য্য হয়ে পড়েছে ভীষণ, হাসপাতালের খাবারও তার বেজায় নাপসন্দ । চকোলেট ও খেলনা দিয়ে তাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টায় প্রাণপণ মগ্ন নার্স আন্টিরা । আসলে এই মারণ ভাইরাসের কামড়ে ভীষণভাবে কাহিল ওরা মা, ছেলে দুজনেই ; শুধুমাত্র বয়সের স্বল্পতার কারণেই যুদ্ধটা শেষমেষ জিতে নিয়েছে এ যাত্রায় । 




ক্যালেন্ডারের পাতায় আজ এপ্রিলের উনিশ । হাসপাতাল থেকে সবেমাত্র ছাড়া পেয়েছে ওরা । মা-ছেলেকে নিয়ে পারিবারিক গাড়ি এসে থামল নিজেদের বাড়ির গেটে । দরজা খুলে মাটিতে পা রাখতেই শ্রেয়া মুখোমুখি হল মালতীর । উল্টোদিকের বাড়ি থেকে কাজ সেরে তখন সবেমাত্র বেরিয়েছে মেয়েটা।      




" কিগো বৌদি ! কেমন আছো? শরীর এখন ঠিকঠাক তো? " --- বলে হাসিমুখে শ্রেয়ার দিকে এগিয়ে আসতেই তার গালে সপাটে চড় বসাল শ্রেয়া ।     



" লজ্জা করে না?  আমার বরটাকে মেরে, আমাদের সবাইকে আক্রান্ত করে এখন সতীপনা হচ্ছে? জুতিয়ে মুখ বেঁকিয়ে দিতে হয় তোর ! " --- গগনভেদী চিৎকার শ্রেয়ার ।


--- " কি সব বলছো বৌদি? আমি আবার কী করে মারলাম দাদাবাবুকে ?"



--- " নেকাপনা করার জায়গা পাও না, না? পইপই করে বললাম, মিত্তিরবাবুদের কাজটা বন্ধ রাখ কদিন ! শুনলি না । ওখান থেকেই তো ভাইরাসটা নিয়ে তুই এলি আমাদের বাড়ি ।"



---" কিন্তু ওই বিদেশি রোগ তো আমাকে ধরেইনি । "



--- " শয়তান মেয়েছেলে ! খবর পাই না ভেবেছো তুমি, হ্যাঁ ? তুই নিজে করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলি আর এখন ধরা পড়ে নাটক করছিস ! মাধব আমাকে সব বলেছে ।" 



--- " বৌদি , হাসপাতালে সাতদিন আমি ভর্তি ছিলাম ঠিকই, তবে সেটা করোনা নিয়ে নয় গো বৌদি। ওই বাজি পোড়ানোর দিন রাতে রেডিও নিয়ে বসেছিলাম ঘরের দাওয়ায়,  হঠাৎ কোত্থেকে একটা রকেট এসে পড়ল গায়ে, জামাকাপড় গেল জ্বলে । পাশের ওই বক্সিরা অ্যাম্বু গাড়ি ডেকে আমাকে তড়িঘড়ি নিয়ে গেল হাসপাতালে । ফিরে এসে শুনি পাড়ার ছোকরাগুলো রটিয়েছে যে,  আমার নাকি বিদেশি রোগ হয়েছে । ওই রোগ হলে তো ডাক্তারবাবুগুলো চোদ্দোদিন আটকে রাখে,  কিন্তু আমাকে তো সাতদিনেই ..... এ দেখো, বিশ্বাস না হলে চোখের নিচের কালো দাগটা দেখো;  এখানে এসেই তো সোজা পড়েছিল আগুনটা। " --- কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে শেষ করল মালতী । 



 

শ্রেয়ার চোখের সামনে ভেসে উঠছে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের সেই রাত । অংশু সলতেতে আগুন লাগানোর সাথেসাথেই একটা হাউই সেদিন আকাশের দিকে না গিয়ে রেলিংয়ের ফাঁক গলে সোজা চলে যায় পাশের ঝুপড়িতে । তবে কি সেটাই ........ ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সম্বিৎ ফিরল রামুর ডাকে । রামু এই অঞ্চলে সুপরিচিত সকলের । ভোর হলেই সাইকেল ভরা খবরের কাগজ নিয়ে সে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায় । শ্রেয়ার শ্বশুরবাড়িতে সংবাদ বয়ে আনার কাজটাও দায়িত্ব নিয়ে করে আসছে আজ দু'দশক ধরে ।




 " বৌমা, নাও । আজকের পেপারটা রাখো। এখন পুরোপুরি ঠিক আছো তো মা? "---  মৃদুস্বরে প্রশ্ন করে রামু ।                   




হালকা হেসে উত্তর দিতে যাবার আগেই শ্রেয়ার চোখ আটকে যায় সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় --- " করোনা থেকে সুস্থ হয়ে আজ ঘরে ফেরার কথা সল্টলেকের মোবাইল ব্যবসায়ীর স্ত্রী শ্রেয়া রায় ও পুত্র রাতুল রায়ের । শ্রেয়াদেবীর স্বামী অংশুমান রায় একই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত হয়েছেন এগারো দিন আগেই । সেক্স এসকর্ট সিলভিয়া ব্রাউনের থেকেই এই সংক্রমণ বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান । গতমাসে এক বিদেশি ক্লায়েন্টের বুকিং অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে উড়ে যান সিলভিয়া, তারপর দেশে ফিরে ভিন্ন ভিন্ন দিনে প্রায় পনেরো জন ক্লায়েন্টের সাথে রাত কাটান তিনি । ঘটনাক্রমে, তারা সকলেই এখন ভর্তি বেলেঘাটা আইডির আইসোলেশন ওয়ার্ডে । ইতিমধ্যেই, জীবনযুদ্ধে পরাস্ত হয়েছেন অংশুমানবাবুসহ আরও তিনজন। কাল ভোরে দেহ রেখেছেন সেক্স এসকর্ট সিলভিয়া ব্রাউন স্বয়ং । তাঁর দেওয়া বয়ান অনুসারেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে তাঁর ক্লায়েন্টদের সম্পর্কে আর এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের সকলের রিপোর্টই পজিটিভ । "                  




দিগ্বিদিকজ্ঞানশূন্য শ্রেয়া আজ ভেঙে পড়েছে অঝোর কান্নায় । তার যত্নে গড়া অহংকারের প্রাসাদ হয়তো দুমড়ে মুচড়ে চৌচির হতে চলেছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই । সংক্রমণের আতঙ্ক কাটিয়ে সামনে দাঁড়ানো মালতীকে প্রাণপণে বুকে আঁকড়ে ধরেছে ক্রন্দনরতা শ্রেয়া ; মালতী বুঝে উঠতে পারছে না কিছুই । করোনা মরসুমে বাজার ভর্তি হাজার মাস্কের ভিড়ে নিজের স্বামীর মুখোশের আড়ালের ভয়াবহ নগ্ন মুখটা এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে শ্রেয়াকে । 









                         

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু