বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

তেরঙা পতাকা উনিশ পয়সার দিনে

বিদেশী শাসনের থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটা দু-শতক পরে।

ফুল ও বাজী দিয়ে উৎসব উদযাপনের রেশ পুরো দেশ জুড়ে।

এক-পাতা খবরের কাগজ – টেলিগ্রাম – বিলোনো হচ্ছে রাস্তায় রাস্তায়।

আমার বয়েস তখন আড়াই; দিদিরা কাগজ প’ড়ে আমাকে ছবি দেখায়।

বাবাকে ফিরতে দেখে অবাক হ’য়ে মা ব’ললো, “কি হ’লো? তুমি যাওনি পড়াতে?”

“না, পড়বে না ছাত্রেরা আজ, স্বাধীন হয়েছে দেশ, তাই সব মেতে আছে মজাতে।”

“রাঁধবো কি দিয়ে? রোজকার খাবার মতো বাজার না নিয়ে কেন তুমি বলো এলে?”

‘আজ আমার টিউশনির মাইনে পাওয়ার কথা, পেলাম না কিছু ওরা ছুটি চাইলো ব’লে।”

তন্ন তন্ন খোঁজ বাবার, নজর পড়লো কাগজে বানানো বোর্ডে, দাদা এটাতে ক্যারম খেলে;

বোর্ডের গায়ে ক্যারমের ঘুঁটি - উনিশটা ফুটো পয়সা, বাজার ক’রবে ব’লে বাবা নিলো তুলে।

পণ নিলাম, ঝলসানো রুটিটা নামাবো আকাশ থেকে একদিন, যাবোনা গরীবের ক্ষুধা ভুলে।

 

শনিবারে হাফডে, সব্বার থেকে চাঁদা নিয়ে কিছু ক’রবে ব’লেছিল অলকা; কিজন্যে তার ছিলনা কোনো খবর;

যেই ছুটি হলো, ন-বছর বয়সী আমাকে নিয়ে গিয়ে বসালো অলকা বরের আসনে, দিলো মাথায় বরের টোপর।

দুমিনিট পরে আমার পাশেই বসানো হলো মিষ্টিকে; ওর মাথায় কনের মুকুট, পরনে একটা রাঙা শাড়ী।

মেয়েরা শাঁক বাজালো, প্রণব মন্ত্র পড়লো, ‘আমি আর মিষ্টি এখন স্বামী-স্ত্রী’– এই ঘোষণা ক’রলো জারী।  

ছুটির পরে বাড়িতে ফেরার সময় হ’লো, তখন কয়েকটা সেয়ানা মেয়ে হুকুম দিলো, ‘বিয়ে হ’য়েছে মিষ্টির,  

চলবে না নিজের বাড়িতে ফেরা; এবারে স্বামীর ঘরে ডেরা’; অবাক আমি- মিষ্টি রাজী, হাসিমুখ মোর স্ত্রীর।

মাকে অলকা বসলো বোঝাতে, 'মিষ্টির মা মামার বাড়ীতে। ছুটির আগে ওকে দিন থাকতে’, মা রাজী হ’লো।

গ্রীষ্মের ছুটি পড়তে, বন্ধু এলো থাকতে, চায় শহর দেখতে। ‘ফিরেছে মা, বাড়ী যাবেনা?’, মিষ্টিকে মা বল্লো।

এরপর ছেলেদের স্কুলে; মেয়ে-দেখা মোটেই না চলে। ন’বছর বাদে উনিশপয়সার দিনে ওর সঙ্গে দেখা হ’লো।

 

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু