বর্ণপরিচয় করুক বিশ্বজয়
আঠের-শো কুড়ি সালের ছাব্বিশে সেপ্টেম্বরে,
পেয়েছিল ভারতবর্ষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরে।
দেশাচার আর কুসংস্কারের যাবতীয় শৃঙ্খল
বিচূর্ণ করি ঈশ্বর চেয়েছিল সমাজের মঙ্গল।
বিধবাকে দিয়েছিল নতুন ক’রে বাঁচার অভয়।
মুক্তি প্রতিবাদের ভাষার জন্ম দেয় ‘বর্ণপরিচয়’।
২০১৭ সালে ইউনেসকোর বিচারে বাংলা মধুরতম ভাষা,
কিন্তু বাংলার বাইরে এ-ভাষার বেঁচে থাকার কতটা আশা?
বিশ্বকবি লিখেছিলেন ফাল্গুনে, তেরোশো দুই-এর বৎসরে -
‘কে তুমি পড়িছ বসি আমার এ-কবিতাখানি কৌতূহলভরে?’
এখন চোদ্দশো আটাশে এখানে সিডনীতে, অস্ট্রেলিয়ায়,
বাংলায় ভাবতে, বা স্বপ্ন দেখতে অনেকেই লজ্জা পায়;
দু হাজার পঞ্চাশ সালের আগেই - হয়তো অবহেলায়,
বাংলাভাষা কেবল বাঁচিয়ে রাখা উঠবে হ’য়ে এক দায়।
কবে বাংলা বলতে পড়তে লিখতে শিখবে পুরো পরিবার?
প্রতিবেশীদেরও বাংলা শেখাবার আমরা কবে নেবো ভার?
বাঙ্গালীর চিন্তাধারার হোক নানা ভাষায় অনুবাদ,
পৃথিবীর সুযোগ উপভোগ বাংলা বইয়ের আস্বাদ।
বাংলা সাবটাইটেল হবে সব বিদেশী সিনেমার,
বাংলা সিনেমার হবে অন্য ভাষায়ও সম্প্রচার।
বাংলা পড়ানো হবে পৃথিবীর প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে,
অধ্যাপনা করবো বিনা কোনো পয়সার বিনিময়ে।
নতুন অভিবাসীদের বাংলা শেখাবো বিনা পয়সায়,
বাংলা ছড়াবে মুখে মুখে আমাদের স্বেচ্ছা-সেবায়।
কুসংস্কার থেকে মুক্ত হ’য়ে বিশ্ববাসী নিশ্চয় নির্ভয়।
আবার বিদ্যাসাগর হবো, লিখবো নতুন বর্ণপরিচয়।।
*** * ***