বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

চিড়িয়াখানার চড়ুইভাতি

শীতের ঠাণ্ডা লম্বা ছুটিতে, লালু-বুলু ভাইবোন দুটিতে, বেড়াতে গেলো চিড়িয়াখানায়।

বাঘ-সিংহ-ভালুক ভয়ঙ্কর, দেখে ওদের লাগলো ডর, ভাগ্যে ওরা বন্ধ এখন খাঁচায়।

এদের বাচ্চারা সব কোথায়, ওদের নিয়ে এট্টু খেলা যায়, শুনলো ওরা গেছে স্কুলে।

ওরা গেলো জিরাফের কাছে, শুধালো, ‘স্কুল কোথা আছে?’, জিরাফ লম্বা ঘাড় তুলে,

দেখালো পথ স্কুলে যাবার। লালু-বুলুর কৌতূহল অপার, দৌড়ে গেলো বেড়াঘেরা বনে।

শেখাচ্ছে সেথা হাতী টীচার, শুঁড় দুলিয়ে শাসন যে তার; পশুশিশুরা শোনে একান্ত মনে।

 

“কী ক’রবে তেষ্টা পেলে?  চেঁচাবে ‘জল চাই’ ব’লে”, হাতী বলে, “বলোতো - একবার সবাই”।

সিংহশাবক বলে, ‘জল চাই’; বাঘের ছানা বলে, ‘জল চাই’; কাঙ্গারু-জিরাফ-ছানারাও বলে তাই।

“কারুর যখন খিদে পাবে, ‘খাবো’ বলে ডাক দেবে”, হাতী বলে, “প্রত্যেকে বলো দেখি ‘খাবো”।

সিংহশাবক গর্জালো, ‘খাবো’; বাঘের ছানা চ্যাঁচালো, ‘খাবো’; ক্যাঙ্গারু-জিরাফ-ছানাও বলে ‘খাবো’।

“যখন চাও আরাম ক’রতে, ব’লবে আমি ‘চাই ঘুমোতে’, “প্রত্যেকে বলো দেখি ‘ঘুমোতে চাই”।

সিংহশাবক বলে, ‘ঘুমোতে চাই’; বাঘের ছানা বলে, ‘ঘুমোতে চাই’; কাঙ্গারু-জিরাফ-ছানাও তাই।

“যখন পেয়েছে পেচ্ছাব, পাচ্ছো দারুণ সে চাপ, তখন ব’লবে ‘হিসি’, ক’রবে বাথরুমে প্রস্থান।“

‘হিসি’ ব’ল্লো সিংহছানা, ‘হিসি’ ব’ল্লো বাঘছানা, কাঙ্গারু-জিরাফ-ছানা; সবাই বাইরে যেতে চান।

টীচার ব’ললো “সবাই দাঁড়াও, যদি পেটে হাগবার চাপ পাও, তখন ব’লবে ‘হাবু’, ছুটবে পায়খানায়।

‘হাবু’ ব’ললো সিংহছানা, ‘হাবু’ ব’ললো বাঘছানা, কাঙ্গারু-জিরাফ-ছানা; ক্লাস শেষ, সবাই উঠে দাঁড়ায়।

 

প্রত্যেক শনিবারে দুপুরবেলায়, লালু-বুলু যেতো চিড়িয়াখানায়, শুনতো, মন দিতো হাতী টীচারের কথায়।

শুনতো কথা সব ছাত্রছানাদের, একই কথার বলার রকমফের, তবু বুঝতে পারতো কে কী ব’লতে চায়।

হাতী টিচার ব’ললো লালু-বুলুকে, খ্রীষ্টমাসে ছাত্রেরা যাবে পিকনিকে, পঁচিশ তারিখে এসো তোমরা দুজন।

বাবা ও মার পুরো অনুমতি নিয়ে, দাঁড়ালো লালু ও বুলু স্কুলে গিয়ে; দেখলো পিকনিকের বিরাট আয়োজন।

 

পিকনিক হ’লো পাশের এক বনে, হিংস্র জানোয়ারেরা ছিলনা সেখানে, লালু ও বুলুরও ছিল না কোনো ভয়।

কাঙ্গারু, জিরাফ, সিংহ এবং বাঘ- সবাই পরেছে বর্মের মতো পোষাক, যাতে কামড় দেবার সুযোগ না হয়।

 

যার যে খাবারের নিত্য প্রয়োজন, তার জন্যে সে-ধরণের আয়োজন, যাতে সবাই মনের আনন্দে করে ভোজন।

লালুবুলুর খাবারেও নেই কোনো সাজা, যা পেয়েছে তাই খেতেই ওদের মজা, ‘খাবো’ ব’লে আনন্দ বিনোদন।

 

খাওয়ার পরে ফিরবে পাঠশালায়, গুনে গুনে সবাইকে ট্রাকে ওঠায়; একজন কম, কে হারালো? হাতী হয়রান।

বাঘের ছানা নেইকো কোথাও; কিক’রে সে হ’লো যে উধাও? সবাই মিলে খুঁজে বেড়ায়; দিনের হবে অবসান।

 

এই সময়ে ঠিক ব’ললো বুলু, -শুনেছি বাঘ ব’লেছে, ‘হাবু’; দেখো নিশ্চয়ই ও গেছে কোনো একটা পায়খানায়।

এখানে বিশাল বিরাট বনে- পায়খানা আছে চার কোণে; ছাত্রেরা বিভ্রান্ত, চার ভাগ হ’য়ে চার দিকেতে দৌড়ায়।

 

এক কোণেতে মিললো বাঘের ছানা; ‘হাবু’ সেরে সে পরছিলো পোষাকখানা; ক্যাঙ্গারু গিয়ে ক’রলো উদ্ধার।

ভাগ্যিস বুলু ছিল ওদের সঙ্গে; বীরের সাজ উঠলো বুলুর অঙ্গে; শুরু হ’লো চিড়িয়াখানায় বুলুর জয়-জয়কার।

 

                                         *** ** ***

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু