বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

জীবনের ইতিহাস

     

             


তখনকার দিনে ভালোবাসার বিয়ে ছিল না বাবা-মা যেমন দেখে বিয়ে দিতেন সেই বিয়ে মেনে নিত। পাত্র-পাত্রী দুজনকেই মেনেও নিতো, এই রকমই পাশাপাশি

গ্রামের মেয়ে রীনা বেশ সুন্দরী লেখাপড়া খুব বেশি হয়নি অল্পবয়সে বাবা মারা যান। 

দাদারা বিয়ে দেন।

রীনার শ্বশুরমশাই তার রূপ দেখে পছন্দ করে বৌমা নিয়ে এলেন। ছেলে শহরে চাকুরী করে, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি তার খুব ভালই লাগতো আদর ছিল খুব, সব রান্নাই কিছু দিনের মধ্যেই শিখলো শাশুড়ী মার হাত ধরে ।


শ্বশুরমশায়ের  বৌমা অন্ত প্রাণ,কেউ বৌমা সম্পর্কে কোনো ত্রুটি বলবার উপায় নেই।

তার জন্য শাড়ি,মুখে মাখা ক্রিম ,সাজার জিনিস সবকিছু কিনে দিতেন।

তবুও কিছুদিন পর বৌমাকে ছেলের কষ্টের জন্য শহরে পাঠাবেন মনস্থির করলেন।

 

ছেলেকে বললেন বাবা, তোমার কাছে বাসাবাড়িতে বৌমাকে নিয়ে যাও।


ছেলে বলল, কেন বাবা?ও থাক তোমাদের কাছে, তোমাদের বয়স হয়েছে ওর থাকা জরুরি তাছাড়া মায়ের ও বয়স হয়েছে! দেখাশোনার জন্য কাউকে থাকতে হবে।


বাবা ছেলের যুক্তি মানতে রাজি নন, বললেন না! ওতো দুর থেকে প্রত্যেক সপ্তাহে আসা খুব কষ্টকর আমি এটা অনুভব করি বাবা।


অগত্যা শহরে রীনা শহরে এসে সংসার আরম্ভ করলো স্বামীরও খুব ভালো মানুষ ভালবাসা  বা কোন কিছুই খামতি রাখেন নি ।

শহরের ধাঁচে খাট, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং টেবিল সোফা সব কিছু বানিয়ে দিলেন।



ছেলে খুব ভালো  অমায়িক স্বভাবের বাবা-মাকে মাঝে মাঝেই নিয়ে আসতেন নিজের কাছে রাখতেন ।

কিন্তু নিজ স্বাধীনতা ছেড়ে বাবা-মা বাড়িতে থাকতেই ভালবাসতেন চলে আসতেন।


কিছু দিন পর একটি কন্যা তার একবছর পর একটি পুত্রের জন্ম হয় । সুখের সংসার সুন্দর চলে।

কিন্তু এক দুর্বুদ্ধি গ্রাস করল!

মাধ্যমিক পাশ করার পর ওখানেই মেয়েটিকে বিয়ে দিলেন। তারপর  হঠাৎ দুজনে আধ্যাত্বিকতা নিয়ে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো ।

ঘরে ঠাকুর দেবতার আলোচনা  নাম সংকীর্তন আরম্ভ হল বিভিন্ন জায়গায় লোকজন সব ঘরে আসা-যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া এই নিয়ে মগ্ন হয়ে পড়ল বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘোরা এইসব কারণে রীনার ছেলেটি ক্লাস এইটে ফেল করলো, শিক্ষা হলো না ছেলেটিকে পৈতে দিয়ে সন্ন্যাসী করে দিলেন !

এই শুনে শশুর মশাই খুব অভিমান হল ! আমার একমাত্র নাতিকে সন্ন্যাসী করে দিলে! মা- তোমার উপর ভরসা করে আমি শহরে পাঠিয়েছিলাম, এটাই কি আমি ভুল করলাম!

 ছেলে বললেন- বাবা,সবাই নিজের ভাগ্যে খাবে চিন্তার কি আছে আর ভুলেরই কিছু নেই তুমি ওসব ভেবো না।



 গ্রামের মেয়ে রীনা নিজের ফেলে আসা গ্রামের জীবনের কথা ভুলে অহংকারে মত্ত সব ভুলে গেল। কথাবার্তা বদলে গেল 

 শ্বশুর-শাশুড়িও গত হলেন, অহংকারে বললেন গর্ভে ধরলেই মা হওয়া যায় না।


ভালো ঘরের ছেলে পায়ে হেঁটে গোটা ভারত গমন করে । বোম্বেতে যাওয়ার পর এক ভদ্রলোক  সব জানার পরে বলল বাবা এটা কি লাইফ! তুমি আমার কাছে চাকরি করো আমি জামাকাপড় কিনে দিচ্ছি।

 ছেলেটি অকুলে কুল পাওয়ার মত চাকরিতে প্রবেশ করে।

রীনার  কাছে খবর এলো ছেলে চাকরি করছে  ।

স্বামীকে বলল- ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো তুমি এনে দাও।

রীনার কথায় নিয়েএলেন একটি দোকান করে দিলেন বিয়ে দিয়ে সংসারী করেলেন। দোকান বেশি দিন চালাতে না পেরে সে পথ ও বন্ধ হয়ে গেল।

এবার ছেলে এখানে খান চাকরি করে কোনরকম সংসার চালতে আরম্ভ করল।

দুঃখের সংসার হয়ে দাঁড়ালো।

দুঃখে কষ্টে স্বামীও পরলোকে গমন করেন, 


রীনা জীবনে এলো দৈন্যতা, অর্থ কষ্ট। ছেলে তেমন কিছু চাকরি করে না একটি সন্তানও হয়েছে। দিনে দিনে অর্থের কষ্টে দিন পেরোতে লাগলো


শেষে বাড়ী বিক্রি করে রীনা দেশের বাড়ি চলে গেল সেখানে বেশিদিন থাকতে না পেরে আবার শহরে ফিরে এলো মেয়ের কাছে মেয়ের কাছে কিছুদিন থাকার পর কিছু অসুবিধে বোঝার পর না থাকার মনস্থ করলো 

মেয়েকে বললেন আমার অন্য কোথাও থাকবো এখানে নয়।

মেয়ে বাধ্য হয়ে মাকে পৌঁছে দিলো শেষ ঠিকানায় সেটা "বৃদ্ধাশ্রম"।


      ‌          ****************


পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু