বইয়ের বিবরণে ফিরে যান প্রতিবেদন পর্যালোচনা

নিশীথিনী

নিশীথিনী


সংযুক্তা



পাঁচতলা বাড়ী - পুরোটাই   না না শাড়ী নয়, খালি, একদম খালি।এটা একটা নতুন ফ্ল্যাট বাড়ী। প্রতি তলায় ছয়টা করে ফ্ল্যাট। তিন ধরণের ফ্ল্যাট আছে এখানে - সম্পূর্ণ অসম্পূর্ণ, আধা সম্পূর্ণ আর সম্পূর্ণ।রিমির ফ্ল্যাটটা আধা হয়েছে মানে এখনো পাথর ঘষা বাকি তবু রিমি ছোট করে নারায়ণ পুজোটা সেরে নিয়েছে। কিন্তু ওর বর ঐ বাড়ীতে থাকতে রাজী নয়, এত ধূলো বলে।কিন্তু রিমির ফ্ল্যাটটার প্রতি এক অদ্ভূত টান। ছুটির দিনগুলোতে ও চায় ফ্ল্যাটে গিয়ে থাকতে কিন্তু সেটা আর হয় না।একদিন রিমি রাগ করে দুপুরে খেয়ে উঠে চলে গেল নতুন ঘরে।ধূলো ঝেড়ে ঘরদোর পরিস্কার করতে করতেই ক্লান্ত হয়ে পড়লো ও। সন্ধ্যার সময় ওর বর ফোন করে জেনে নিলো ও রাতে বাড়ী ফিরবে কিনা। রিমি কি খাবে রাতে - এসব।রিমি বলে দিল ঘরে আতপ চাল আছে, ও  ভাত করে ঘী দিয়ে খেয়ে নেবে।চারতলায় বারান্দায় বসে বসে চারপাশের আলোর রোশনাই দেখতে বেশ লাগছিল ওর।এই ফ্ল্যাটের একদম  নীচের তলায় গোটা তিনেক  দোকানও আছে। কিন্তু রাত দশটার আগেই সব দোকান বন্ধ হয়ে গেল। ধীরে ধীরে শুনসান রাস্তাঘাট। রিমি উঠে গিয়ে ভাত বসালো। আজ শনিবার রিমির ছুটি, কাল দীপাবলি। বাংলা থেকে অনেকটাই দূরে থাকে ওরা, এখানে দীপাবলি বিরাট উৎসব, কয়দিন ধরে আলোর মালায় শহরের সব বাড়ীঘর সেজে ওঠে। বারান্দায় বসে বসে রিমি ভাবে বাড়ীতে আজকের দিনে চোদ্দবাতি দিত ওরা। মনে মনে ভাবলো, আনলেই পারতো কয়েকটা প্রদীপ বা আলোর চেনগুলো।  বাড়ীতে ফোন করতেই কর্তা মশাই বলল, এখনো খাও নি, খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি। আর শোনো কাল সকালে আমি কচুরী আলুরদম কিনে নিয়ে যাব, ওখানেই টিফিনটা করে নেবো, তারপর প্লীজ বাড়ী চলে এসো। রিমির খুব হাসি পাচ্ছিল ওনার কথা শুনে। একদিন বাবুকে একা একা খেতে হয়েছে তো তাই তেল মারছে।ওটা বলে বাড়ী, আরে ওটা তো ভাড়া বাড়ী, এটা নিজের।

খেয়ে উঠে সব সেরে দেখে সাড়ে এগারোটা বাজে। বারান্দায় গিয়ে বসে থাকে রিমি। হঠাৎ খেয়াল হয় চুলটাই তো বাঁধা হয় নি। খোঁপাটা খুলে দিয়ে মাথায় আঙুল চালায়, বেশ আরাম লাগে। বসেই আছে বারান্দায় হঠাৎ খেয়াল করে বারান্দার গ্রীলের ওপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে ফ্রক পড়া একটা মেয়ে। আরিসব্বোনাশ, এ মেয়েটার মাথা খারাপ নাকি, এখানে বসেছে কেন, যেকোনো সময় পড়ে যাবে তো। রিমি চেঁচিয়ে ওঠে - এই মেয়ে নাম এখান থেকে, পড়ে যাবিরে হতচ্ছারী।মেয়েটা রিমির দিকে মুখ ফিরিয়ে হেসে ওঠে। রিমি অজ্ঞান হয়ে যায়।সকালে ওর স্বামী এসে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখে রিমি বারান্দায় পড়ে আছে, জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।

পর্যালোচনা


আপনার রেটিং

blank-star-rating

বামদিকের মেনু