( তুমি দেখো )
তুমি দেখো, আমরা একে অন্যের দিকে খুব করে ঝুঁকে থাকলে,
মন-বন্দরের মিঠেল রোদে, আর্দ্র হাওয়ায় পৃথিবীর ক্রমমুক্তি ঘটবে।
তুমি দেখো, নিবিড় মেরুন অালোয় কোনো এক বৈশাখী রাতে:
তোমার চোখের অশ্রুসাগরকে ঘিরে বসতি গড়বে ভালোবাসার আদিম উপজাতি।
তুমি দেখো, অনন্ত রৌদ্রের থেকে শাশ্বত রাত্রির দিকে যেতে যেতে...
পৃথিবীর বয়সিনী ভ্রমরের গুঞ্জনে ঢেকে যাবে বাকি সমস্ত শব্দের দাপাদাপি।
তুমি দেখো, জলের মরণশীল হাঁকডাক শুনে পৃথিবীর ভরাট বাজার,
কোনো এক নিবিড় অন্ধকারময় আঁচলে মুখ লোকাবে।
তুমি দেখো, শিশিরে আর ঝড়ে ভিজে যাবে তোমার ঠোঁট-চোখ-নাক ;
হাঘরে কালো-মাথাদের একটা কিছু-না-কিছু ব্যবস্থা হবে!
তুমি দেখো, শস্যের ভিতরে রোদ ঢুকবে কোনও উষ্ণ সকালবেলায় ।
কোনও স্নিগ্ধ রাতে নক্ষত্রেরা সাতপাঁচ ভেবে সনির্বন্ধতায় নেমে আসবে।
তুমি দেখো, গগ্যাঁর অদৃশ্য তুলি ঘুরেফিরে রঙ মাখাবে শহরটার সারা গায়...
একটা ধবল চিতল-হরিণী তোমার-আমার শিরায় ছুটবে সমস্ত বিকেলবেলা ধরে।
তুমি দেখো, বিরাট নীলাভ খোঁপা নিয়ে দু-এক মুহূর্ত তুমি বসবে আমার চোখের পাতায়...
গভীর নীলাভতম চোখে তাকাবে মাঝরাতের সাদা চাঁদের মতো।
তুমি দেখো, লুপ্ত নাসপাতির গন্ধ আলোর রহস্যময়ী সহোদরার মতো নাকে লেগে থাকবে ঠায়,
প্রেমিক চিলপুরুষের শিশির-ভেজা চোখে জ্বলে উঠবে কামনার নক্ষত্র।
তুমি দেখো, সবুজ ঘাসের গন্ধ একটা দুরন্ত শকুনের মতো দিগন্ত ছাড়িয়ে যাবে ।
জীবনের দুর্দান্ত মত্ততায় ভরে যাবে তোমার-আমার প্রাচীন মশারি, রোম্যান্টিক সনেট ।
তুমি দেখো, পৃথিবীর যাবতীয় শোক এক লহমায় প্রাচীনতম মদের নেশায় কেটে যাবে।
আর এক গ্লাস লিমেরিক হাতে নিয়ে আমি তৃপ্তচিত্তে ধরাবো একটা আরামদায়ক সিগারেট।
( অভ্র )