মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য...More
মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আনন্দ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে আমার পরবর্তী গল্প সংকলন। এটিই আমার হোয়াটস এপ নাম্বার।
লগইন করতে ফোন নাম্বারে কোড সিস্টেম চালু করুন।
Book Summary
আধ্যাত্মিকতা
ধর্ম শব্দের অর্থ যা ধারণ করে অর্থাৎ মানুষ বা জীবজগৎ যে সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ প্রথার মাধ্যমে ( ঈশ্বরোপাসনা ও আধ্যাত্মিক উপাসকদের দ্বারা নির্লিপ্ত জীবন-যাপনের মাধ্যমে) নিজেকে বিস্তৃত ও প্রসারিত করতে সচেষ্ট হন তাহাই ধর্ম, এই অর্থে সমস্ত সংঘ, সমিতি অথবা ধর্মস্থাণগুলো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানব কল্যাণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভ্ৰাতৃত্ববোধের আদর্শকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে চলার নামই মহা মিলনক্ষেত্র।
সমস্ত ধর্মস্থাণ,সভা-সমিতি,অর্থাৎ মানুষের যোটবদ্ধ যে কোন উদ্যোগই সমর্থনযোগ্য যা মানসিক উন্নতির সহায়ক। ধর্মানুরাগ, সাহিত্যানুরাগ সমাজ,দেশ, মানুষের যে কোন মহৎ উদ্যোগ যার দ্বারা সমাজ,দেশ,মানুষের কল্যাণ সাধিত হয় তা-ই ধর্ম।
স্বাধীনোত্তর যুগের পাশ্চাত্যের অধিকৃত ভারতবর্ষ ছিল একচেটিয়া ইংরাজ শাসনের দখলে। এক তৃতীয়াংশ দরিদ্র, অশিক্ষিত, অত্যাচারিত নীচ সম্প্রদায়ের অবহেলিত মানুষ এদের পোষ্য ছিল। এক শতাংশ ছিল উচ্চবংশ ধনী সম্প্রদায়ের যারা ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং সমাজের কুলীনগোষ্ঠীর। যদিও এদের মধ্যে পাশ্চাত্যের পা চাটা বাঙালীও ছিল যাদের দ্বারা দেশ প্রভূত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ১৮৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের পর ভারতবর্ষের আকাশে অন্ধকারাচ্ছন্ন গভীর দুর্যোগ ঘনিয়ে আসে যে সময়কাল পৃথিবীর ইতিহাসে তমসাচ্ছন্ন দিন হিসেবে খ্যাত। বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরের সহায়তায় পাশ্চাত্যের বণিক লর্ড ক্লাইভের সূক্ষ্ম দূরভিসন্ধী ও ষড়যন্ত্র টলিয়ে দিয়েছিল মোঘল সাম্রাজ্য। এরপরই শুরু হয় ভারতবর্ষের অন্ধকার যুগ এবং হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জয়যাত্রা।
অন্ধ,কুসংস্কারাচ্ছন্ন,মূর্খ দরিদ্র ভারতবাসীর জীবনে নেমে আসে নৃশংসতা,অত্যাচার। সমস্ত সুযোগ সুবিধা একশ্রেনীর শিক্ষিত উচ্চবিত্ত বড়লাট শ্রেনীর অধীনে থাকত যাদের চলাফেরা ওঠাবসা প্রভৃতি ছিল ইংরাজ শাসকের অনুকূলে বস্তুত পাশ্চাত্যের ভাবধারা,বিজ্ঞান, সাহিত্য,উন্নত কারিগরী শিক্ষা,জীবনযাত্রার উন্নত বনিয়াদ প্রভৃতি টলিয়ে দিয়েছিল একাংশ উচ্চবিত্তের ভাবধারাকে। অপরদিকে নিম্ন বর্ণের দরিদ্র মানুষজন ছিল শাসকদের নির্যাতনের শিকার। জোর করে ঘর জ্বালিয়ে, ঘরের বৌ,মেয়েদের সকলের সামনে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা ছিল প্রধান খেলা। যত বেশি তমসাচ্ছন্ন ছিল মানুষের জীবন যাপন ততোধিক ছিল শাসকদের উৎপীড়ণ। দেশের অবস্থা ক্রমে শ্বেতাঙ্গদের আমোদ,প্রমোদ ও ভোগবিলাসের ক্ষেত্রে পরিণত হয়। অসংখ্য নারী নিরীহ মানুষ এদের নৃশংসতার শিকার হয়। দেশ জুড়ে অরাজগতা চরমে উঠলে উনবিংশ শতকে শুরু হয় নবজাগরণ। তৎকালীন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু, লর্ড বেন্টিঙ্ক, রাজা রামমোহন রায়,কালী প্রসন্ন সিং প্রমুখের ব্রিটিশদের উন্নত বিজ্ঞান,সাহিত্যানুরাগ,প্রযুক্তিবিদ্যা প্রভৃতি দ্বারা উদ্ধুদ্ধ মনিষীগনের সহায়তায় শুরু হয় নবজাগরণ।জাত ধর্ম নির্বিশেষে এই সভায় সকলের যোগদানের অধিকার ছিল। স্বাধীনোত্তর ভারতে এই সভায় স্বামিজীর যাতায়াত ছিল।
তিনি বলতেন সমস্ত সংকীর্ণতার উর্ধে সমগ্রের সুখ দু:খ হাসি বেদনায় সমান অংশীদার হতে পারলে অন্তর থেকে ক্ষুদ্রতা দূরীভূত হয়|এর জন্য আত্মহংকার ছেড়ে মিলিয়ে যেতে হবে সকলের মধ্যে মূলত: এই ভাবধারার মধ্য দিয়েই তিনি এক স্বাধীন ভারত গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন |এবং পরবর্তীকালে ত্রিশ কোটি ভারতবাসীর মানবসেবক গড়তে সেই উপযুক্ত তরুণদের ও আধ্যাত্মিক সন্ন্যাসীদের নিয়ে গঠন করেন উপযুক্ত সেবকদল এবং সেবাশ্রম সঙ্ঘ মঠ মিশন আশ্রম প্রভৃতি|
সেই 'কলাম্বাস হলে প্রথম উচ্চারিত শব্দের অন্তর্নিহিত শক্তি উদ্বেলিত করে তুলেছিল গোটা ভারতবর্ষকে। সমস্ত দেশ থেকে আগত সন্ন্যাসীদের যার প্রথামাফিক বক্তৃতায় চমক ছিল না কোন। সেই বিশ্বজনীন সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্লাবিত হয়ে উঠেছিল মানবজাতির একাত্ববোধ,সেই ভাষণে ঝংকৃত হয় বৈদিক ঋষির বাণী ও সৌভ্রাতৃত্বের একাত্বতা। শিবজ্ঞানে জীবের পূজা ও সেবা হল পরমব্রম্মের সাথে মিলিত হওয়ার একমাত্র সহজ উপায় এই ছিল তার জীবনের মূল মন্ত্র। সিংহল থেকে মাদ্রাজে ফিরে এসে ভারতবাসীর সামাজিক, অর্থনৈতিক, অশিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ের প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে নির্দেশ দিতেন বলতেন সর্বদা ধর্ম পূজা ধ্যান করলেই চলবে না কর্ম করতে হবে , কর্ম বলতে তৎকালীন চড়কায় পড়ণের বস্ত্র তৈরি থেকে শুরু করে নিজস্ব জমিতে চাষ আবাদ ,ফসল ফলানো ,লাঙল দিয়ে জমি চাষ প্রভৃতি ছিল মঠ মিশনগুলোর নিত্য কর্তব্য এর মাধ্যমে ছেলে/ যুবকদের আত্মনির্ভরতা, সুস্বাস্থ্য আত্মপ্রত্যয় তৈরি হয় |নিজে স্বাবলম্বী হও " এই ছিল তার প্রধান শিক্ষা| প্রাত:কালে জপ তপ প্রাণায়াম যোগ ব্যায়াম শরীর চর্চা প্রভৃতির মাধ্যমে শুরু হত দিনপঞ্জি| তার মৃত্যুর পরেও রামকৃষ্ণ মিশন মঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলি তারই আদর্শে অনুপ্রাণিত গঠন করে চলেছে আদর্শ ভাবধারার অসংখ্য উজ্জল দেশপ্রেমি যারা আজও পথ দেখিয়ে চলেছেন সমাজ দেশের আদর্শ মানুষ তৈরির ভূমিকায় | সেই সময় অর্থাৎ ১৮২৮ খ্রীষ্টাব্দে রাজা রামমোহন রায়ের নবজাগরণ প্রতিষ্ঠিত ও ১৮৩০ খ্রীষ্টাব্দে সেটি কার্যকর হলে অস্বস্তিতে পড়েন ব্রাম্ম সমাজের সেবকগন |