মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য...More
মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আনন্দ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে আমার পরবর্তী গল্প সংকলন। এটিই আমার হোয়াটস এপ নাম্বার।
লগইন করতে ফোন নাম্বারে কোড সিস্টেম চালু করুন।
Book Summary
উদ্দাম হাসি
কিরে খবর কি ,কাজ মিটেছে?
মিটবেনা মানে, শালা আমার পাশে থেকে আমাকেই চোখ দেখাচ্ছে হারামি,
দশ ফোটার বেশি দিসনা যেন
জানি, শালি মাথায় কয়েক ঘাঁ দিলেই খতম হয়ে যেত কিন্তু না মরলে বিপদ, পাতে থুতু দিয়েও ওকে জব্দ করতে পারলাম না সিট্।
কম্মটা তারাতারি সেরে ফেল্ বাড়ি ঘরের খদ্দের প্রায় রেডি, একজন তো মুখিয়ে,তবে কি অর্ধেক দর হাঁকছে।
হুম ঘরের ভেতর মরলে শালা মোটেই দাম দেবে না
না দিক, মরতে ওকে হবেই,আর তোকে আমি চাই ব্যস ছেলেটা যেমন আছে থাকবে তোর বরটা যেমন বোঝে বুঝুক। খুব বেশি বেগোরবাই করলে........"
উদ্দাম হাসিতে ফেটে পরে যমুনা সঙ্গে প্রানকেষ্ট। শবর উপজাতির লোক এভাবেই কথা বলতে অভ্যস্ত। পাশাপাশি ঘর টালির ছাউনি। লোকটা রাতদিন এক করে ঘর ছাওয়া কখনো মাটি কাটা ইট বহা গর্ত খোড়া বাড়ি পরিষ্কার ইত্যদি করে বৌয়ের জন্য চুড়িটা হারটা শাড়িটা নিয়ে ঘেঁমে নেয়ে একশা হয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফেরে| বাড়ি পরিষ্কারের কাজটা বেশ লাভের। লোকজনের অসতর্ক মুহূর্তে টুপ করে এটা ওটা ব্যগে পোড়া যায় কখনো ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে দামী শাড়িটা গামছাটা। একটু বেশি ডেসপারেট হতে পারলে টেবিলের ঘড়িটা চুড়ি দুল হার মায় মানি পার্স পর্যন্ত পাওয়ার চান্স পাওয়া যায়। কাজ পাওয়া যায় শহরের দিকে বাবুদের বাড়িতে না'হলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শহরের মোড়ের মাথায় কাজের তাগাদায়।এতসব বুঝিয়ে নিজের ছেলেটাকেও ইদানিং নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছে কাজে। ভাগ্যের যা অবস্থা সেদিন পাঁচটা টাকা বেশি চাইলে মুখের পরে জবাব, বলে কিনা পয়সার গাছ আছে নাকি রে?
আমিও শালা বেমালুম পেতলের ফুলটবটা ঝেড়ে দিলুম আড়ালে, রাতে মোটা টাকায় বেঁচে দিলাম।
ক্লাশ সিক্সে পড়লেও লেখাপড়ায় আদৌ মন নেই তাছাড়া বাপ মায়ের চোদ্দ গুষ্টির কালির আঁচড় নেই পেটে। বরং এ কাজে উপরি আছে ধরতে না পারলে, ভালো টাকা ইত্যদি।
ততক্ষনে মুখ দিয়ে গ্যঁজলা উঠা শুরু হয়েছে প্রাণকেষ্টর বৌয়ের। গোঙানি শুনে ঘরে উঁকি দিয়েই চিৎকার শুরু হয়ে যায় -
'ওগো তোমরা কে কোথায় আছো গো আমার বৌ কেমন করতিছে.....'
ছুটে আসে আশপাশের লোকজন। নিথর দেহে তখন কোন প্রাণ নেই। ডুকরে কেঁদে ওঠে যমুনা,
'ও দিদিগো আমার কি সব্বোনাশ হল গো এবার কি হবে গো....'
ওইটুকুই ব্যস। প্রাণকেষ্টর পাঁকা ঘরে টালির ছাউনি দেরাজ খাট এল সি ডি টিভি ফ্রিজ গ্যস সব সুন্দর করে সাজানো। বৌয়ের একজোড়া সোনার দুল ও চুড়িও আছে। ব্যঙ্কে কিছু মালকড়িও জমানো আছে।
সে ভাবে যমুনার বেড়ার চাঁচড়ি দিয়ে ছাওয়া একটা আটচালা কুড়ে,ঝড় বন্যায় তাপ্পি দিতে দিতেই মাসখরচা শেষ। কত যে উপোস দিতে হয় তার কোন ইয়ত্তা নেই। বর্ খাটলেও কোথায় প্রাণকেষ্টর টাকা আর ওর বর,কেষ্টর হাতের ময়লা। রাগে জ্বলে যায় শরীর, হাত পাখা থামলেই ঘুমের ঘোরে জোর লাথি ঘুষির অত্যচারে জর্জরিত বেচারা ধনু বৌয়ের বাতাস করতে করতেই কেটে যায় ভরা পূর্নিমার সোহাগ রাত।
রাতভোর ঘাড়ের গামছায় ঘামে ভেজা শরীর মোছে আর হাত পাখায় শান্ত করে বৌয়ের শরীর।
পাড়ার জনা ছয়েক টেম্পো করে "হরিবোল" ধ্বনি দিতে দিতে মৃতদেহ নিয়ে যায় শ্মশাণ ঘাটে। ছেলেটা তখনও জানে না হুট করে মা'টা মরে গেল কেন।
সেই রাতেই প্রানকেষ্ট আর যমুনা, যেখানে তীব্র বিষের জ্বালায় ছটফট করছিল ওর ধামার মার্কা ঘেটো বৌটা ঠিক সেইখানেই সোহাগ রাতের বিছানা বেছায়। মৃতের কিছু বাঁচিয়ে রাখা ফুল ছিটিয়ে দেয় চাদরের পরে।পাশের টেবিল থেকে তুলে নেয় রুপোর সিন্দুর কৌটা আগিয়ে ধরে প্রানকেষ্টর দিকে.........
তৃপ্ত মিলনের ভয়ংকর হাসিতে গমগম করে ওঠে বিষদগ্ধ ধনুর বৌয়ের মৃত আত্মার একরত্তি ঘরটা.......
শেষ---"
*মাফ করবেন পাঠকবন্ধুরা,গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং এসব চরিত্রের কোন অস্তিত্ব নেই। তবে অত্যন্ত রাঢ় অঞ্চলের রূঢ় ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে ঘটনার চরিত্রের নিষ্ঠুরতা বোঝানোর কারণে। ভুল হলে নিজ গুনে ক্ষমা ঘেন্না করে নেবেন।