মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য...More
মল্লিকা রায় / বারাসাত
ফোন নম্বর 9330781877
এটাই আমার গুগুল পে ও ফোন পে নাম্বার। বারাসাত উ:24 পরগণা আমার বসতবাটি, স্বামী মৃত, লেখালেখিই বর্তমান সময় যাপন, ইতি পূর্বে শপিজেন থেকে আমার একটি বই 'একের ভেতর তিন' তিনটি উপন্যাস সংকলন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দীর্ঘ 12 বছর ধরে ষান্মাষিক পদক্ষেপ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আনন্দ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হতে চলেছে আমার পরবর্তী গল্প সংকলন। এটিই আমার হোয়াটস এপ নাম্বার।
লগইন করতে ফোন নাম্বারে কোড সিস্টেম চালু করুন।
Book Summary
স্টোনম্যন
ভোর চারটের আধো অন্ধকারে ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকা নারায়নবাবুর পায়ে আচমকা কিসের একটা ধাক্কা লাগে, মি: নারায়ন চ্যটার্জী, চার্টার্ড একাউন্টেড বোলপুরে নিজস্ব ফার্ম আছে বৌ, ছেলে, মা বাবা ,নিয়ে বনেদি পরিবার.......
পোস্টে তখনও রাতবাতির আলোয় ঝাপসা শহরের ছবিটা পরিস্ফুট হয়নি। সবেমাত্র শহর আড়মোরা কাটিয়ে পাশ ফিরে শুয়েছে। এখনও একপ্রকার ঠান্ডার আমেজ শরীর মনের ঘরে জাঁকিয়ে বসেছে যেন শেষ প্রহরের এই আরামটুকের রেশ ছাড়া যায় না কোনমতে। ভারী কিছুর সঙ্গে আচমকা হোঁটট খেয়ে পড়তে পড়তে কোনমতে সামলে নেন তিনি। অবশ্য এই আধো অন্ধকারে সকাল সন্ধ্যে হাঁটতে বেড়োবার অদ্ভুত রোমাঞ্চ একটা আছে বৈকি। সারা রাত্রির ক্লেদ ঘাম সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন হয়ে একেবারে ঝড়ঝড়ে শরীর মন নিয়ে বাড়িতে ঢোকার মেজাজটাই আলাদা। প্রথম আকর্ষণ নোয়াখালীর বৌদি দ্বিতীয়ত টেনিস প্লেয়ার সুইটির প্র্যকটিস আওয়ার। খোলা মাঠটায় শর্টস শার্টে ছোট্ট বলটা নিয়ে উহ্ সে কি দাপাদাপি। আসলে নারায়ন বাবুর বয়স বাড়ালেও এধরনের দৃশ্য লক্ষ্য বিশেষত এক উদ্ভিন্ন যৌবনার প্রোরোচিত প্রত্যঙ্গের ধাপে ধাপে ওঠাপড়া,নিটোল দুধ সাদা অনাবৃত পা দুখানার অবাধ সঞ্চালন ওকে এক মোহাচ্ছন্নতায় আবদ্ধ করে তোলে। সে এক অন্যরকম অনুভূতি অন্যপ্রকার শিহরণ শুধু নারায়ন বাবু কেন এক তৃতীয়াংশ পুরুষেরই এই অভিরুচির বহু প্রকার আমরা দেখতে অভ্যস্ত প্রায়ই। ফেরার পথে ছুঁইয়ে ফেলা নোয়াখালির বৌদির ঝড়ঝড়ে শরীরে আলাদা রকমের আকর্ষণ থাকলেও ঠিক এ ধরণের লুব্ধতা নেই।
মাঠ বরাবর রমণী কোমড়ের মত একটি সরু রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে ধানক্ষেত ছুঁইয়ে। সবুজ হলুদের সংমিশ্রণে শিষগুলো ভোরের সতেজতায় মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানাচ্ছে প্রভাতী বাতাসকে। ফুটপাতের শেষেই সেই কাঙ্ক্ষিত রাস্তা। সেই তপস্বিনী বুকের উপর ক্ষেতের চড়াই উৎরাইয়ের অবাধ সৌন্দর্য্য মেলে আছে প্রাণমন। কোথাও টুপটাপ ঝড়ে পড়ছে গতরাতের ধরে রাখা শিশির। এ দৃশ্যও কতবার ক্যমেরাবন্দী হয়ে ঠাঁই পেয়েছে বুকসেল্ফের বাঁধাই ফ্রেমে। যতদূর চোখ যায় সবুজ আর সবুজ মাঝে মধ্যে হলুদের বিন্যাস যেন শিল্প সত্ত্বাকে ঝুঁটি নাড়িয়ে সাজিয়ে দিয়েছে রং তুলির পারিপাট্যে।এ সময়টা প্রকৃতির যুবতী দশা। কৌমার্য্যের অবয়ব খসে প্রকৃতি মেয়ে পরম বালখিল্যের হাসিতে উন্মনা হয়ে মাতিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবেশটাকে। কখনো পাতা শিষের আড়াল থেকে খসে পড়ছে তার অনাবৃত প্রত্যঙ্গ। বাতাসও দুষ্টামি করে কখনও টেনে নিচ্ছে আঁচল কখনও বেনুনী কখনও পুরো মানুষটাকে। নারায়নবাবুও প্রাণমন ভরে উপভোগ করেন সে দৃশ্য। একঝলক ঠান্ডা বাতাসের ঝলক ওর শরীর মনকেও চাঙ্গা করে দিয়ে যায়। প্রাত্যহিক যাপনের এই সন্ধিগুলোকে নিয়ে সারাদিন তিনি বেশ আমোদেই থাকেন। তারপর চলে তার ভোর থেকে দিনান্তের ধরা বাঁধা প্রাত্যহিকী। এর সবটাই তার স্বরচিত স্বযাপন। অবশ্য এর ভেতরে কিছু সাংসারিক খুঁটিনাটি ইত্যদি নিয়ে আজও তিনি বেশ রগরগে........
হাঁটা পথ শেষে ফুটপাথে পা তুলতেই হালকা আলোয় পেছন ফিরেই চমকে ওঠেন তিনি। সর্বনাশ এ তো একটি মৃতদেহ! বিশাল দেহের ! কোথাও কোন আঘাতের চিহ্নমাত্র নেই। কেবল ভারী কোন বস্তু দিয়ে আঘাত করে থেতলে দেওয়া হয়েছে ব্যক্তির মাথাটি। যথাসম্ভব বড়গোছের পাথর জাতীয় কিছু হবে।পড়ণের ময়লা,ছেড়া কাপড় থেকে কটূ গন্ধ এসে লাগছে নাকে , দু:স্থ গোছের কোন মানুষ হবে ভয়ে কিছুটা দূরে সরে গিয়ে থমকে দাঁড়ান তিনি সঙ্গের বাকি তিনজন অবশ্য অনেকটা পেছিয়ে|প্রতিদিন এমনই হয় সঙ্গীরা পেছিয়ে পরেন অনেকটা ,হাঁটার পাল্লায় নারায়ন বাবুর সমকক্ষ কেউ আসেনি আজপর্যন্ত কাজেই কিছুটা এগিয়ে ওদের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকে না|কিন্তু মারল কে, কে আততায়ী এই নিয়ে মানুষের উদ্বগের সীমা নেই খবরে প্রকাশ এই পর্যন্ত পুলিশের জালে অপরাধীর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে কিন্তু শনাক্ত করা যায়নি প্রকৃত খুনিকে অনুসন্ধিৎসু বহু ব্যাক্তি এসেছেন গরাদের ভেতর পরস্পর দাঁড়ানো দরিদ্র অতি সাধারণ মানুষগুলোর মধ্যে কাউকেই হরর বলে মনে হয়নি অনেকেরই|বিকৃত মস্তিষ্ক কোন পাগল টাগল হবে - উড়িয়ে দেওয়া যায়নি এধরণের মন্তব্যকেও| মোটকথা স্টোনম্যান অর্থাৎ পাথর থেতলে মানুষ খুনের এই আততায়ীর প্রকৃত চেহারা সম্পর্কে মানুষ একপ্রকার অন্ধকারে|
'ওহ্ রাতে লাইন করে শুয়ে থাকা নিরীহ ভিখীরিগুলো আগলে রাখে পুরো ফুটপাথটা ঘুম ভাঙেনা অনেকেরই,নিশ্চিন্তে পায়চারী করার মত উপায় নেই একটু, বিরক্ত নারায়ন বাবু
'আপনারা একটু দেখে শুনে হাঁটবেন,প্রকাশবাবু সামনে দেখে হাঁটুন'
নির্দেশ দেন দলটাকে|