#কবিতা -জলহীন স্বপ্ন ✍️Tapas Paik
ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্ন দেখে গ্রীষ্মের বিছানা থেকে উঠে বসি!
গলদঘর্ম হয়ে বিদ্যুৎ হীন কোনো পৃথিবীতে হাত পাখা খুঁজি!
'একটু জল দাও ' বলে চিৎকার করে উঠি দুপুরের ঘুম ভেঙে!
একফোঁটা হলেও হবে তৃষ্ণায় বুঁকের পিঞ্জর যে শুকিয়ে যায় ।
কোথায় ছিলাম আমি, এ কোন পৃথিবীতে এতক্ষন?
যেখানে সারি সারি মানুষ দিচ্ছে পারি কোনো এক অজানা দেশে ।
তৃষিত বক্ষে আকাশ পানে চায় মাঝে মাঝে --যদি একফোঁটা জল পাওয়া যেতো!
তাদের যাত্রাপথের দুই ধারে নেই কোনো গাছ, শুধু ধু ধু বালুকা রাশি ।
পায়ের নিচে গলিত লাভার উত্তাপ, মাথার ওপর উন্মুক্ত উজ্জ্বল আকাশ ।
অর্ধগলিত সুস্বাদু শুষ্ক চিকেনের মতো তাদের--বুভুক্ষু পৃথিবী একনিমেষে গিলে ফেলতে চায়!
জল হীন পৃথিবীতে চারিদিক মহাশূন্য লাগে, তবু তারা হেঁটে চলে দূরের কোনো সমুদ্র পানে
আগামীর পৃথিবীতে একফোঁটা পানীয় জল নেই আর! দিশেহারা প্রাণীকুল! গাছেদের শুকনো পাতায় নেই কোনো রস!
অগত্যা সুদূরের কোনো সমুদ্রের নোনা জলের আশায় তাদের অক্লান্ত পথ চলা!
মিছিলের প্রতিটি মানুষ ভুলেগেছে আজ --যে নোনা জল তাদের জন্য নয়!
তবু সারি সারি মানুষ দিচ্ছে পারি কোনো এক অজানা সমুদ্র দেশে ।
যেথায় নোনা সমুদ্র চুষে চুষে খায় স্থলোভাগের প্রাণীদের রক্ত ।
যেথায় অসীম জলভান্ডার, সুনীল বারি সুরা রাশি রাশি,
তবু মানুষের তৃষ্ণার এক ফোটা জল নেই কোনো প্রান্তে ।
তবু বিস্মৃত মানুষ আগামীর পৃথিবীতে ছুটে চলেছে সেদিকেই অজান্তে!
যাত্রা পথের শেষে সমুদ্র তটে অসংখ্য মৃত মানুষের কঙ্কালের স্তুপ দেখা যায় ।
যারা বেঁচে ছিলো অবশেষে -নিদারুন তৃষ্ণায় করে যায় হায় হায়!
অগণিত জীবিত মানুষের অবশেষ বালুকাবেলা খুঁড়ে চলে প্রানপনে,
তাদের তৃষ্ণার্ত আত্মা বুকের পিঞ্জর ছেড়ে বেরিয়ে আসে একে একে জলের সন্ধানে!