• 17 April 2023

    ঋণশোধ

    ঋণশোধ

    0 29

    ঋণশোধ
    শুভময় মণ্ডল

    কাহিনীর সূত্রপাতটা বেশ কশেক বছর আগে। তখন আমার কলেজের ফাইনাল ইয়ার। তখনও আমাদের গ্রাম দিয়ে বাস রুট চালু হয়নি। বাসস্ট্প ছিল গ্রাম থেকে প্রায় তিন ক্রোশ দূরে।

    সেখানে কৃষকদের জন্য ছোট একটা বিশ্রামঘর ছিল। যদিও সময়মত সংস্কারের অভাবে, তার হাল খুব একটা পছন্দসই লাগতো না আমাদের।

    বাসস্টপে তখন থেকেই আছে একটা বটগাছ, তার নিচে মা কালির থান, আর তার আসে পাশে চারদিকে চারটে দোকান - একটা মিষ্টির আর তিনটে চা বিড়ি সিগারেটের।

    এমনিতে তো এক এক রুটের বাসের ড্রাইভার-কনট্রাক্টর-খালাসিরা এক একটা দোকানে চা খেত, এখনও খায় - এটাই ওদের ট্রেণ্ড।

    কিন্তু চায়ের দোকানের মূল কাস্টমার বলতে গেলে, ছিলো - কলেজে পড়া ছেলেমেয়েরা, আর কিছু অপেক্ষারত বাসযাত্রী, ব্যস।

    আমাদের আড্ডা জমতো - মূলত ঐ চায়ের দোকানগুলোতেই। আর ঐ তিনটের মধ্যে একটা চায়ের দোকান চালাতো - নেপালদা। চা বিড়ি ছাড়াও, তার স্পেশালিটি ছিল - ডিম টোস্ট।

    ওখানেই একটা কলেজ থাকলেও, সব বিভাগ না থাকায়, আমি পড়তাম অন্য কলেজে। আর আমার সেই কলেজটা ছিলো বেশ অনেক দূরে।

    তাই, বাড়ি আসলে, আর ক্লাস শুরুর আগে কলেজে পৌঁছাতে হলে - আমায় খুব সকালের দিকে ঐ বাসস্টপে এসে, একটা দূরপাল্লার বাস ধরতে হতো।

    স্বভাবতই, বেশিরভাগ দিন বাড়ি থেকে শুধু চা বিস্কুট খেয়েই দৌড় দিতাম। ঐ বাসের কর্মীরা আবার, নেপালদার দোকানেই বসে একটু জিড়িয়ে নিতো, চা টা খেতো।

    ওখান থেকে পরবর্তী বাকি রাস্তায় - আর কোথাও কোন টাইম কিপার না থাকার খুশিতে, বেশিরভাগ দিনই বাস ছাড়তে তারা একটু দেরীই করতো।

    আমিও সেই সুযোগে, নেপালদার দোকানেই ডাবল ডিমের ওমলেট আর চা বিস্কুট দিয়ে, সকালের হাল্কা ব্রেকফাস্টটা সেরে নিতাম।

    এখানে, নেপালদার সম্পর্কে একটু বলে রাখি - তার দুধে আলতা গায়ের রং, একবারে টুকটুকে ফরসা বলতে যা বোঝায় আর কি! আমার থেকে বয়সে - তা প্রায় বছর দশ বারো বড় হবে।

    নেপালদার বাড়িতে, সাবেকি মা কালির অধিষ্ঠান ছিল। আর নেপালদার ছিল মায়ের প্রতি অগাধ ভক্তি। নিজে, স্ত্রী আর দুই কন্যাকে নিয়ে, কোন কোন দিন অভুক্ত থাকলেও, মায়ের সকাল সন্ধ্যা সভোগ নিত্যসেবা দিতে ভুলতো না সে!

    চায়ের দোকান থেকে, তার যে পকেট ভর্তি উপার্জন হতো না - সে তো বলাই বাহুল্য। তবু সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো।

    জন্মসূত্রে সে বড় ঘরের ছেলে ছিলো, কিন্তু কম বয়সে - বাপ মা (সেইসঙ্গে আত্মীয়-ভায়াদদের বদান্যতায় জমিজমাও) হারিয়ে, তার পক্ষে আর উচ্চশিক্ষিত হয়ে ওঠা হয়নি।

    খুব অল্প বয়স থেকেই, তাকে রোজগারের রাস্তা দেখতে হয়েছে। নিজের পেট আর মায়ের পুজো এই দুটো চালিয়ে যাবার চেষ্টা - তাকে আশৈশব করে যেতে হয়েছে।

    চায়ের দোকানের রোজগারে, তার একসময় চলে গেলেও, তখন চারটে প্রাণীর পেট ও মায়ের নিত্যসেবা চালিয়ে যেতে, রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলো নেপালদা!

    তো সেইবছর, দূর্গাপুজোর আগে বাড়ি ফিরছিলাম, পুজোর ছুটি পড়ে গেছে কলেজে। আমি তখন নিজের হাতখরচ, আর টুকিটাকি দরকারে বারবার বাবার কাছে হাতপাতা এড়িয়ে যেতে, গোটা চারেক টিউশন করি।

    পুজোর আগে, সবাই মাইনেগুলো দিয়ে দেওয়ায়, হাতে প্রায় হাজার খানেক টাকা এসেছিলো। তাই, মায়ের জন্য সেই প্রথমবার - খুবই সাধারণ মানের হলেও, একটা শাড়ি কিনেছিলাম সেই টাকায়, আর বাবার জন্য একজোড়া চামড়ার জুতো।

    হাতে তারপরেও শ' দুই তিন টাকা ছিলো। বেশ সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছিলো সেদিন - কলেজ থেকে ফিরতে ফিরতে। বাসস্টপে নেমে দেখি - সন্ধ্যের এত পরেও, নেপালদার দোকান খোলা রয়েছে!

    ওখানে তখন বাসস্টপের দোকানদাররা কেউই, দোকান বন্ধ করতে বেশি রাত করতো না। কারণ, মাঝ মাঠে অবস্থিত ঐ বাসস্টপে, সন্ধ্যের পর যে সব যাত্রীরা নামে, তারা কেউই চা বা মিষ্টির দোকানে ঢুকতো না বড়। এরা বেশির ভাগই ছিল মূলত নিত্যযাত্রী, তাই দ্রুত বাড়ি ফেরারই তাড়া থাকতো তাদের।

    নেপালদার দোকান খোলা দেখে, ওখানে গিয়ে ঢুকলাম। দোকান খালি, নেপালদা গালে হাত দিয়ে উদাস ভাবে বসে! বললাম - কি গো, এত রাত অবধি দোকান খুলে রেখেছো, কি ব্যাপার?

    নেপালদা বললো - আর বোলো না ভাই; কাল ষষ্ঠী, আর এখনও ছোটো মেয়েটার জন্য একটা জামাও কিনতে পারিনি।

    বড়টাকে তবু একটা দিয়েছে স্কুল থেকে। এখন ছোটোটাকে একটা জামাও যদি দিতে না পারি দূর্গাপুজোয়, তো কোন মুখে বাড়ি যাই বলো দেখি?

    শুনে মনটা দুঃখে ভরে গেলো। আমার মা, বাবার জন্য তো কিনেছি আমি কিছু - তাঁরা সেগুলো পেয়ে কতটা খুশি হবেন তখনও জানিনা, কিন্তু আমি যে মন থেকে কতটা আনন্দিত ছিলাম, সেটা তো আমি জানি।

    তাই, পকেট থেকে একশ' টাকার একটা নোট বের করে নেপালদার হাতে দিয়ে, তাকে বললাম - আপাতত এটা দিয়ে কিছু ম্যানেজ করতে পারো কিনা দেখো।

    নেপালদা আমার মুখ পানে চেয়ে বললো - এ বাবা, তোমার কাছ থেকে... আমি তার ইতস্তত করার কারণটা বুঝতে পারলাম।

    তাই, বললাম - আগে আমার ভাইঝিকে কিছু কিনে তো দাও। পরে সময় সুযোগ হলে না হয়, ফিরিয়ে দিও আমায়। আমি কখনও তোমার থেকে চাইতে যাবো না। তোমার সময় হলে দিও।

    তারপর, তার হাতে টাকাটা গুঁজে দিয়ে, বাড়ি চলে এলাম। রাতে মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে, তাঁর সাথে গল্প করতে করতে, বললাম ঘটনাটা।

    মা বললেন - খুব ভালো কাজ করেছিস বাবা। পুজোর সময় একটা শিশু নারায়ণ, যদি তোর জন্য গায়ে একটা নতুন জামা পড়তে পায়, তার চেয়ে পুণ্যের আর কি আছে?

    এরপর, পুজো ফুরাতেই, আমি চলে গেছি কলেজ হোস্টেলে। ফাইনাল ইয়ারের চাপের জন্য - বাড়ি ফেরাও হয়নি তারপর বহুদিন।

    প্রায় মাস ছয়েক পর যখন ফিরলাম, দেখি - বাসস্টপে নেপালদার সেই ছিটেবেড়ার, নড়বড়ে দোকানটা ভেঙে পড়েছে। ভিতরেও কিছু নেই!

    খবর নিয়ে জানলাম - দূর্গা পুজোর পর আর নাকি, দোকানই খোলেনি নেপালদা। তার মাস খানেক পর, একদিন ঐ রাস্তা দিয়েই কর্মসূত্রে এক জায়গা থেকে ফিরছি, হঠাৎ নেপালদার সাথে দেখা।

    ভ্যানরিক্সায় শুয়ে ফিরছে - নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে। পাশে বৌদি বসে ছিলেন, বললেন - পুজোর সময় থেকেই খুব শরীর খারাপ, উঠতে পারে না, সারক্ষণ গায়ে জ্বর। ডাক্তার দেখাচ্ছি, কিন্তু... তাঁকে থামিয়ে নেপালদা বললো - ও কিচ্ছু না, দু একমাসেই সেরে যাবে। তুমি, ভালো আছো তো ভাই?

    আমি বুঝলাম - নেপালদা কিছু গোপন করছে, আমায় এড়িয়ে যেতে চাইছে। তাই বললাম - হ্যাঁ গো, রয়েছি মোটামুটি। চলো আর দাঁড় করিয়ে রাখবো না তোমাদের। বাড়ি গিয়ে বিশ্রাম নাও।

    রিক্সা চলতে শুরু করলো, বৌদি আমার দিকে করুণ চোখে নিরুপায় ভঙ্গীতে চাইলেন। আমি দেখলাম, চোখদুটো ভরে গেছে তাঁর জলে।

    আমিও কিছু মন্দ আশঙ্কা করেই, দ্রুত বাড়ি ফিরে গেলাম সেদিন। ভাবলাম, পরে একবার ওর বাড়িতে গিয়ে ভালোমত খোঁজখবর নেবো।

    পরদিন, আমায় কলকাতা ছুটতে হলো - একটা বিশেষ পারিবারিক কাজে। ফিরলাম দু তিন দিন পর। তাই, নেপালদার খবর আর নেওয়া হয়নি। সত্যি কথা বলতে কি, মনেও ছিল না - ঐ পারিবারিক কারণেই।

    তার সপ্তাহ খানেক পর, হঠাৎ একদিন শুনলাম - নেপালদা মারা গেছে! আমার আর কখনই তার বাড়িতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।

    এর পরের ঘটনাটা - তার প্রায় বারো বছর পর।
    আমি এখন কর্মসূত্রে, কলকাতা শহরতলীর বাসিন্দা। স্ত্রী এবং কন্যা নিয়ে একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে থাকি।

    হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায়, অপিস থেকে ফিরে এসে শুনি - আমার তিন বছরের বাচ্চা মেয়েটা, খাট থেকে পড়ে গিয়ে, ব্যথা পেয়েছে মাথায়!

    ভালো করে তার মাথাটা পরীক্ষা করে দেখলাম - না, ফুলে টুলে যায় নি। মেয়েও একদম চনমনেই আছে। আমার সাথে একটু খেললোও।

    কিন্তু রাতে খাওয়ার পর, হঠাৎ বমি করে দিলো। তো আর না খাইয়ে, তাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার বমি!

    ঘুমালো, তবু ঘুমের মধ্যেই বমি করে চলেছে! এক আধবার না, বারো তেরো বার বমি করে, মেয়েটা আমার একবারে নেতিয়ে পড়লো!

    বমি বন্ধের জন্য তার ওষুধ আনাই ছিল ঘরে। কিন্তু ওকে খাওয়াতে গিয়ে দেখি - তারও ডেট এক্সপায়ার করে গেছে!

    রাত তখন সাড়ে বারোটা। অগত্যা আর এতটুকু কালবিলম্ব না করে, মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে, দৌড়ালাম - নিকটতম ওষুধের দোকানে, যা ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।

    ওষুধটা কিনেই মেয়েকে খাওয়ালাম। দোকানের কর্মচারীরা বললো - এতবার বমি করেছে যখন, ঐ ওষুধটা না খাইয়ে বরং ওটা ইনজেক্ট করান।

    প্রস্তাবটা ঠিকই ছিলো, কিন্তু ইঞ্জেকশান দেবার কোন লোকও ছিল না তখন ওখানে। ওদিকে মেয়েটা আবার বমি করলো! মুখে যা দিচ্ছে, একটু জল পড়লেও বমি করছে সে তখন!

    এমন সময়, পুলিশের পোশাকে কয়েকজন সেখানে এলেন - ওষুধ নিতে। আমার মেয়ের অবস্থা দেখে, তাঁদেরই একজন বললেন - দেরী না করে, এখনই হসপিটালে নিয়ে যান।

    কাছের সরকারী হাসপাতালে, শিশুচিকিৎসক থাকে এখন ২৪ ঘন্টা! ওখানেই যান, এখন তো আবার ট্যাক্সিও পাবেন না। ঠিক আছে, আমরাই পৌঁছে দিচ্ছি, আমাদের গাড়িতেই চলুন।

    তখন, আমরা অসহায়, নিরুপায়, দিশাহারা। ওনাদের কথামত, গেলাম সরকারী হাসপাতালে। অফিসারটি, ঐখানে কর্মরত তাঁদেরই একজন সহকর্মীকে বললেন, আমাদের শিশু বিভাগে নিয়ে যেতে।

    আমরা গেলাম, চিকিৎসক এসে মেয়েকে ভালো করে চেক করলেন। ওষুধ যা ছিলো তাই খাইয়ে যেতে বললেন, আর তার সাথে শুধু একটা যোগ করে দিলেন।

    বললেন - ভয় না পেতে, খুব সম্ভবত, মাথার চোট থেকে বমিটা হয়নি। পেটের গণ্ডগোলের জন্যই হবে। তবু একবার পরদিন, মাথাটা স্ক্যান করে নিতেও উপদেশ দিলেন।

    আমরা বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখি - সেই অফিসারটি তাঁর গাড়ি নিয়ে, আবার ফিরছেন ওখানে!

    আমাদের কাছে এসে বললেন - ডাক্তার কি বললেন দেখে? আমি সব জানালাম। শুনে, তিনি বললেন - এখনই ওষুধটা কিনে, বাচ্চাটাকে খাওয়ান একবার। চলুন আমরা পোঁছে দিচ্ছি।

    আবার তাঁদের গাড়িতে চেপে ফিরলাম সেই দোকানে, ওষুধ কিনলাম, ওখানেই মেয়েকে খাওয়ালামও। তারপর ওনারা জিগ্গেস করলেন - কোনদিকে বাড়ি আপনার?

    আমি ফ্ল্যাটের ঠিকানা বলতেই, বললেন - আমরাও ওদিক দিয়েই যাবো এখন। চলুন, ছেড়ে দিচ্ছি, কাল কিন্তু স্ক্যানটা করিয়ে নেবেন অবশ্যই। আমিও ঘাড় নেড়ে জানালাম - নিশ্চয়ই।

    ওনারা ফ্ল্যাটের নিচে আমাদের ড্রপ দিলেন। সামনে এগিয়ে কিছুটা গিয়ে, গাড়িটা ঘোরাতে লাগলো ড্রাইভার। মেয়েকে কোলে নিয়ে আমার স্ত্রী, ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে গেলো।

    আর আমি, ওঁদের আরো একবার ধন্যবাদ দিয়ে, বিদায় জানাবার জন্য, দাঁড়িয়ে রইলাম - রাস্তার পাশে একটু অন্ধকারের মধ্যে সরে গিয়ে।

    তখনই শুনতে পেলাম ঐ গাড়ির ড্রাইভারটা, অফিসারটিকে জিজ্ঞাসা করছে - স্যার, আপনি এনাদের চিনতেন? আমার তো সেরকম লাগলো না!

    অফিসারটি উত্তর দিলেন - চিনি না শুধু রে, ঋণী। ওনার মেয়েকে যে রক্ষা করতেই হতো রে। একদিন, আমার মেয়ে পুজোয় পড়নের জামা পেয়েছিলো - শুধু ওনার জন্য!

    কথাটা শুনে, আমি চমকে উঠে, গাড়িটার মধ্যে থাকা, অফিসারটার দিকে ফিরে তাকালাম। গাড়ির ভিতরের কেউ নজরে এলো না।

    আমি অন্ধকার দাঁড়িয়ে থাকাতে, আমাকেও বোধ হয় তাঁরা কেউ দেখেননি। আমি স্ট্রীট লাইটের আলোয় দেখলাম - ধোঁয়া হয়ে আস্তে আস্তে হাওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে, পুলিশের ভ্যানটা!

    আমার স্ত্রী এমন সময়, ডাক দিলো - চলো, আর কতক্ষণ দাঁড়াবে এখানে? কাল বরং থানায় গিয়ে একবার, দেখা করে নেপালবাবুকে ধন্যবাদ দিয়ে এসো।

    নামটা শুনে, আবার চমকে বললাম - নেপাল বাবু? আমার স্ত্রী বললো - আরে ঐ যে ভালো পুলিশ অফিসারটা গো, শুনলে না, পাশের লোকটা ওনাকে তখন ডাকলো?

    আমি তখন, এতগুলো আকস্মিকতার মাঝে যেন, কলের পুতুলের মত চালিত হচ্ছিলাম। ঘরে গেলাম, মেয়ে তখন ঘুমিয়ে পড়েছে, স্ত্রীও ঘুমালো - রাত প্রায় তিনটে! শুধু আমার ঘুম আসলো না!

    পরদিন, মেয়ের সিটি স্ক্যান করিয়ে, একবার খুব উৎসুক হয়ে থানায় গেলাম। জানতে পারলাম - না, শুধু ঐ থানায় না, এখন তাঁদের পুরো পুলিশ কমিশনারেটেই নাকি, ঐ নামের কোন স্টাফই নেই!

    গত রাতের গাড়িটায় দেখেছিলাম যে নাম্বার-প্লেট, সেই নাম্বারের কোন গাড়িও নাকি নেই! এমনকি, ঐ নাম্বারটাও নাকি এখনও অবধি দেওয়াই হয়নি - কোন রেজিস্টার্ড গাড়িকে!

    শুধু আমি না, আমার মেয়েও সেই রাতের অভিজ্ঞতার দ্বারা বেশ প্রভাবিত হয়েছিলো। আজও কেউ তাকে জিজ্ঞাসা করলে, সে বড় হয়ে পুলিশ হবে বলে।

    । সমাপ্ত।



    Shubhamoy Mondal


Your Rating
blank-star-rating
Sorry ! No Reviews found!