• 28 March 2020

    সত্যি গল্প মিথ্যে গল্প

    ফাতিমাদের কথা

    0 50

    ফাতিমাদের কথা                                                                         



    ফাতিমা প্রস্তুত, এতদিন ধরে অভ্যাস করে করে। ও ঠিক পারবে, নিজের ওপর সম্পূর্ণ আস্থা আছে ওর।সকালে উঠে কুয়োর পারে গিয়ে ঠান্ডা জলে স্নান করে নেয় ও, সূর্য ওঠেনি তখনো। বাড়ির সবাই এখনো ঘুমোচ্ছে। দরজা ফাঁক করে দেখে এসেছে, আম্মিজানও ঘুমিয়ে আছে, ভাইয়া কে জড়িয়ে ধরে। এটাই ঠিক সময়,আর দেরি করা যাবেনা, সময় কম,সারে সাত টার মধ্যেই যা করার করতে হবে ফাতিমা কে। ওর দৃঢ় বিশ্বাস ও পারবেই।


    স্নান করে সালওয়ার কামিজ পড়ে নেয় ফাতিমা, বোতল থেকে ঢকঢক করে অনেক টা জল খেয়ে নেয়,আর ব্যাগ খুলে দেখে নেয় অন্য বোতল টা আছে কিনা। তুতে রঙের ওড়না দিয়ে মাথা মুখ পেচিয়ে নেয় ভাল করে। এই ওড়নাটা ফাতিমার খুব প্রিয়, ঈদের সময় আব্বা এনে দিয়েছিল কলকাতা থেকে,সারা গায়ে জড়ির কাজ করা।


    সবাই খুব তাকাচ্ছিল ওর দিকে, প্রথম যখন ও হলুদ ফুলছাপ ওয়ালা সাল্ওয়ার কামিজের সঙ্গে এই তুতে ওড়না টা পড়ে বেড়িয়েছিল! আম্মি সুরমাদানি থেকে এক টিপ লাগিয়ে দিয়েছিল কানের নীচে, আব্বা নারকেল ছুলতে ছুলতে হা করে দেখে যাচ্ছিল ওর দিকে,স্পষ্ট মনে আছে ওর, বলছিল,'আমার বাচ্চি টা কত বড় হয়ে গেল রে! আমি তো টেরই পাইনাই!'


    পা টিপে টিপে দরজার ছিটকিনি খুলে মুখ বার করে দেখে নেয় কেও দেখছে কী না! করিম চাচা অনেক সকালে উঠে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। আজ হঠাৎ ওকে দেখলেই জিজ্ঞেস করবে কোথায় যাচ্ছে ও,কত প্রশ্ন করবে তার ঠিক নেই! তারপর সবার ঘুম ভাঙিয়ে দেবে, আর ফাতিমার কাজ টাই ভেস্তে যাবে।


    অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ও নিজেকে তৈরি করেছে, ওর কোন বান্ধবীকেও জানায়নি যে ও কী করতে চলেছে, সাবানারা জানতে পারলে কিছুতেই ওকে যেতে দিত না, ঠিক বাড়িতে জানিয়ে দিত আর তারপর আর দেখতে হত না!


    ভাগ্যিস সাবানা আর সায়েদা এখানে নেই এখন, ওরা জিয়াগঞ্জ গেছে, মামা বাড়ি,ঘুরতে, আর সায়েদাকে দেখতে আসার কথা ওইখানে, ছেলের বাড়ি থেকে। ওরা বলে দিলে আম্মি আর আব্বা মিলে ফাতিমাকে ঘরে বন্ধ করে রাখত, বা হয়ত খোদাগঞ্জে দাদিজানের বাড়িতে পাঠিয়ে দিত! আর ওর অনেক দিনের সাজনো প্ল্যানটা একদম শেষ! 


    খোদাগঞ্জে যেতে ফাতিমার একটুকু ও ভাল লাগেনা, সারাদিন ঘরে বসে থাকতে হয়,দাদিজান কোথাও নিয়ে যায় না, বেড়োতেও দেয় না। দু একবার একটু বাড়ি থেকে বেড় হয়েছিল ও, গ্রামের লোকজন অদ্ভুত ভাবে তাকায়, মনে হয় অন্য কোন জন্তু এসেছে খোদাগঞ্জে, তাকানো গুলো একদম ভাল লাগে না ফাতিমার,রাগ হয়! ঘরে বসে রুটি বানানো আর সেলাই করতে কতক্ষন ই বা ভাল লাগে, কান্না পায় ওর!


    নাহ, কেউ নেই। দরজা ভেজিয়ে চুপচাপ বেরিয়ে পড়ে, পেছনে তাকিয়েও দেখে নেয় যদি কেউ থাকে।আশ্বস্ত হয়ে জোড়ে হাঁটা দেয় । সফিদুলের আসার সময় হয়ে গেছে, এবার ফাতিমাকে ওর কাছে যেতে হবেই। অনেক বার গিয়েও ফিরে এসেছে। মন শক্ত করে ও।


    নৌকাঘাটের কাছাকাছি চলে আসে জোরে হেঁটে হেঁটে। টুপটাপ করে লোক জমা হচ্ছে ওই পারে যাবার জন্য। সুবল মাঝি ফাতিমাকে চিনে যেতে পারে।ওড়নাটা ভাল করে আটকে নেয় তাই। জুতো হাতে নিয়ে নৌকোয় উঠে বসে সামনের দিকে। মাঝি তাকায় কিন্ত চিনতে পারে না। আস্বস্ত হয় ও একটু।


    নদী পার হতে আধ ঘন্টা মত লাগবে, সময়টা যেন পেরোতেই চাইছে না আর। দুধারে হয়ে থাকা কাশ ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকে ফাতিমা। সূর্যোদয়ের সময় কাশফুল গুলোর ওপর হাল্কা কমলা আভা ছড়িয়ে পড়েছে মনে হচ্ছে। সুজলা সুফলা সুরিগ্রামের ফেলে আসা দিন গুলোর কথা ভাবতে থাকে ও, যখন সায়েদা, সাবানা, নমিতা আর ও নদীর পারে পা ডুবিয়ে বসে থাকত, আর এ ওর গায়ে জল ছেটাত, হাত দিয়ে ছোট ছোট মাছ আর ব্যাঙাচী ধরত, এর ওর বাড়ি থেকে জামরুল,পেয়ারা, বাতাবি লেবু চুরি করে পালাত।তারপর ইস্কুলের পাঁচিলের পেছনে বসে বসে খেত।কম কানমলা খেয়েছে নাকি সেজন্যে!

    সেবার বুনিপুকুড়ের মেলার মাঠে যাত্রা দেখতে গিয়ে হারিয়ে গেছিল  ফাতিমা আর ওর ভাইয়া, এপাড়া ওপাড়া ঘুরে ঘুরে কবর স্থানে ঢুকে পড়েছিল,ওদের শুধু মনে হচ্ছিল কেউ ওদের পিছু করছে,কোন সাদা আলখাল্লা পরা কিছু। ভাইয়াতো ওকে জাপটে ধরেই ছিল ,ওর ওড়না দিয়ে মুখ পেচিয়ে রেখেছিল, কেঁদে কেটে অস্থির! ফাতিমা শুধু ভাইয়াকে বলে চলছিল 'দেখ ভাইয়া, আমরা তো কুনদিন কাউর ক্ষতি করিনাই, আমাগো কিসসু হবে না,আমগো পিছে আল্লাহ আসেন, উনি আমাগো দেইখা রাখবেন! আম্মিজান বলে যে কারো খারাপ করবি না, নিজে ভাল থাকবি তাইলেই হইল,কেউ তরে কিসসু করতে পাইরবে না!'


    তারপর পেছন ঘুরতেই দেখা গেল ওটা কাকতাড়ুয়ার ফতুয়াটা হাওয়ায় খুলে উড়ে কুল গাছের ডালে আটকে গেছিল! উফ!  পরে কী হাসিই না পেয়েছিল ফাতিমাদের। বাড়ি এসে আম্মিজানের হাতে খুব মার খেয়েছিল ওইদিন,আব্বা শুধু বলছিল আর কখনো এমন কাজ না করতে! এখন  ও আর কিছুতেই ভয় পায় না, অনেক সাহস হয়েছে ওর। ভয় ডর পেছনে ফেলে চলছে এখন গন্তব্যে!


    ব্যাগটা ভাল করে চেপে ধরে বসে ফাতিমা,বুকের ভেতর চাপা টেনসন তো আছেই,যতই বলুক ও কিছুতেই ডরায় না! খ্যাপা  বাউল গান ধরে,

    ,'চিননি মন তারে',যে জন তোমার দিল পিঞ্জরে, দিবা নিশি বিরাজ করে,চিননি মন তারে!'


    বিভোর হয়ে গান শোনে ফাতিমা, সব মানে বোঝে না তবু বোঝার চেষ্টা করে ও। কী দরদ দিয়ে গান করে ওরা, বোধহয় খুব দু:খ না পেলে এত দরদ ঝড়ে পরতনা ওর গলা দিয়ে! পাশে বসে থাকা লোকটার ও খুব তাড়া,ট্রেন ধরবে বলে। ঝুড়ি ভর্তি বাদাম আর ছোলা। ওপাশে ময়না মাসিরা দল বেঁধে গল্প করতে করতে যাচ্ছে, কার কাজের বাড়ির বৌদি কত ঠ্যাস দিয়ে কথা বলে সেই গল্প চলছে।মাঝে মাঝে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে, এক দম্পতি ছোট্ট বাচ্চা কে কোলে নিয়ে বসে আছে,সঙ্গে অনেক মালপত্র, দু তিন টে বাজারের ব্যাগ আরো কত কী!


    পার দেখতে পায় ফাতিমা। সকাল হয়ে গেছে,রোদ উঠেছে হাল্কা, কিন্তু হিমের পরশ রয়েছে।তবুও ওর গরম লাগছে,ভেতরে ভেতরে বেশ ঘামছে সে, আটো সাটো হয়ে থাকা ওড়না টাকে একটু ঢিলে করার কথা ভাবে,কিন্তু ভয় পায়। আর তো একটু সময়,তারপরেই স্টেশনে পৌছে যাবে, সাড়ে সাতটার শ্রীরামপুর লোকাল মিস হবে না ওর এবার।


    স্টেশনে পৌঁছে বুক কাঁপে ফাতিমার, আস্তে আস্তে হাঁটে,হোঁচট খায় ভাঙা ইটের টুকরোয়, বুড়ো আঙ্গুলের নখটার কোণ থেকে রক্ত ঝড়তে থাকে, কিন্তু ব্যথা লাগে না ওর এই সামান্য কারণে, ব্যাগ টা আকরে ধরে আবার। প্ল্যাটফর্মে মিষ্টি আওয়াজে মহিলা কণ্ঠ ভেসে আসছে,"২৪আপ শ্রীরামপুর লোকাল তিন নাম্বার প্ল্যাটফর্ম এ আসছে।'


    সিঁড়ি দিয়ে ওভারব্রিজের ওপর উঠে দাঁড়ায় ও।সফিদুল কে খোঁজার জন্য।খুব বেশী ভিড় নেই প্ল্যাটফর্মে, রবিবার বলে। জনা কয়েক কলেজের মেয়ে পিঠে ব্যাগ নিয়ে নামল, খুব হাসছে ওরা কীজানি একটা দেখে মোবাইলে।


    ওরা এগিয়ে গেলে ওর স্কুলের দিদিমণি কে দেখে ও, যে স্কুলে আগে পড়ত। ছুটির দিনে আসিফা দিদিমণি কেন এল! ও হ্যাঁ মনে পড়েছে, আসিফা দিদিমণি তো রবিবার করে মেয়েদের আলাদা করে পড়ায়,যাদের বেশি পয়সা আছে, তারা কী যেন বলে, প্রাইভেট টিউশন না কী,সেটা পড়ে ওনার কাছে! ফাতিমাও স্কুলে যেত একসময়, কিন্তু এখন আর যায় না, ধুর ওর ভাল লাগে না।


    বেশি পয়সাওয়ালা যারা তারাতো ডাক্তারবাবুদের কাছেও আলাদা করে দেখায় নিজেদের, ওরা তাড়াতাড়ি সেড়েও ওঠে, কিন্তু ফাতিমাদের রোগ সহজে সাড়ে না, ওরা ভুগতেই থাকে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর!


      এক নজরে চোখ যায় সফিদুলের দিকে। লাল গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট।সফিদুল এগিয়ে যায় অনেক টা, ভিড়ে মিশে যেতে থাকে। একটুর জন্য ফাতিমার অন্য দিকে মন হয়ে গেছিল, তার মধ্যে কখন যে ও ট্রেন থেকে নেমে গেছে খেয়াল ই করেনি মেয়ে। কোথায় হারিয়ে গেল আর তো দেখা যাচ্ছে না ওকে! যাহ! এতদূর এসে যদি  সফিদুলকেই হারিয়ে ফেলে  তবেতো সব শেষ!


    দৌঁড়তে শুরু করে সিড়ি দিয়ে নেমে ও । কোথাও খুঁজে পায় না, কেউ আবার ওকে দেখে ফেলল নাতো! ভয় পেয়ে যায় ফাতিমা, দাঁড়িয়ে পড়ে চুপ করে।আড় চোখে চারিদিকে দেখে নেয়। নাহ! কেউ দেখছেনা,বাঁচা গেল!


    দূরে দেখা যায় লাল গেঞ্জি কালো প্যান্ট। স্টেশন থেকে বেড়িয়ে হাঁটতে থাকে শিল পাড়ার গলির দিকে। এদিকটা বেশ নিঝুম, রবিবার বলে দোকান পাট ও খোলে নি। কিছুদূর গিয়ে সফিদুল নালার ধারে পেছন ঘুরে দাঁড়ায়, মাথা নীচু করে কাজ করে যেতে থাকে গুণগুণ করতে করতে। পেছনে চলে এসে ফাতিমা হাঁক দেয়,'সফিদুল'!

    সফিদুল পেছন ফিরতেই আর কিছু বুঝে উঠবার আগেই ফাতিমা ওর হাতে ধরে থাকা বোতল টার পুরোটা ছিটিয়ে দেয় সফিদুলের মুখে,বুকে!


    চীৎকার করে ওই অবস্থায় লুটিয়ে নালায় পড়ে যায় ও,ছটফট করতে থাকে যন্ত্রণায়, ফাতিমার খুব ইচ্ছে হয় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখবার,পাছে ধরা পড়ে যায় তাই এক মিনিট ও সময় নষ্ট না করে ও  দৌঁড়ে পালায়, যেমন করে ফাতিমার সুন্দর মুখ টার ওপর এসিড ছুঁড়ে দিয়ে এক মিনিটও দাঁড়ায়নি সফিদুল, ঠিক তেমন ভাবেই ওর সাজানো পথ দেখেই শিখেছে ফাতিমা,ধীরে ধীরে,রাতের পর রাত জেগে, একটুও না ঘুমিয়ে,শুধু চোখের জল ফেলে।


    ওর জীবনের হাসি মজাগুলোকে এসিডে পুড়িয়ে দিতে একবারও হাত কাপেনি সফিদুলের, কতই বা বয়স ওর হয়েছিল! স্কুল থেকে ফেরার সময় রোজ পিছু নিত সাইকেলে করে, আলের ওপর দিয়ে যেতে কী না ভয় পেত এই সফিদুলের জন্য ,কত বোঝান হয়েছিল ওকে,কিছুতেই শোনে না ছেলে! শেষে যেই না আব্বা ওর বাড়ি গিয়ে ছেলেকে দেখে রাখার কথা বলে আসল, মেয়েটার জীবন টাই শেষ করে দিল শয়তান টা! স্কুল থেকে ফেরার সময়!  উফ! আম্মিজান যে বলত ওরা কারো ক্ষতি করেনাই তাই কেউ ওদেরও খারাপ করবে না!


    দৌড়তে দৌড়তে ফাতিমা  চলে আসে নদীর ধারে। আল্লার কৃপায় কেউ ওকে দেখতে পায়নি। সোজা এসে নৌকোয় উঠে বসে ও,দম নেয় জোরে জোরে। পায়ের নখটায় রক্ত জমে শুকিয়ে গেছে, ওড়নার খুঁট নিয়ে রক্ত মোছার চেষ্টা করে ফাতিমা, নৌকোর মাঝি আলম চাচা দাড় টানা শুরু করে ওপারের উদ্দেশে।


    আকাশে  এখন ঝলমল করছে রূপোলী  রোদ। সকালের নরম রোদ নদীর জলে পড়ে ঝিকমিক করছে,কিছুদূর  যাওয়ার পর হাওয়াতে ফাতিমার ওড়না খুলে যায়, উড়তে থাকে চারিদিকে ।


    ও তাড়াতাড়ি নিজের দিকে টেনে নেয় ওড়নাটা কে। কিন্তু মুখে জড়ায় না আর , খোলা হাওয়ায় বেশ লাগছে ওর। দম বন্ধ হয়ে আসছিল ওর এতক্ষন,ঘেমে সারা  শরীর ভিজে গেছে, এখন নদীর ঠান্ডা  হওয়াায় প্রাণ টা জুড়িয়ে  যাচ্ছে ,মন ও। নদীর জল আজলা করে নিয়ে মুখে ঝাপটা দেয়, বড্ড আরাম লাগে!


    একটা নাচনীর দল উঠেছে,দূর্গা ঠাকুরের পালা করতে যাচ্ছে সুরিগ্রামেই বোধহয়। ফাতিমা মনে মনে ভেবে নেয় এবার বাড়ির সকলে মিলে আবার যাত্রা পালা দেখতে যাবে, সব বন্ধুরা মিলে বসে বসে পুরোটা দেখবে। মাঠের ধারে বসা দোকান থেকে ফুচকা, পাপড়,আলুচাট সব খাবে!


    স্বচ্ছ জলে ফাতিমা নিজের মুখ দেখে ঘাবড়ায় না, কতদিন পর ও নিজের মুখ দেখল নিজেই জানে না,আয়না বলে জিনিসটা ওদের বাড়িতে অনেকদিন নেই, ওই দিনের পর থেকে। আজকে ফেরার পথে একটা নক্সা করা আয়না কিনে নিয়ে ফিরবে ঠিক করে ও। ঝুঁকে জলে হাত দেয় ফাতিমা,  পেছন থেকে সেজে থাকা দুর্গাও উঁকি  দেয়  নদীর জলে, আর  তার জলছবি ধরা পড়ে ফাতিমার পোড়া মুখে! হেসে ফেলে ও!



    himimitra@ gmail.com




    Himi Mitra


Your Rating
blank-star-rating
Sorry ! No Reviews found!