নীল নির্জনতা
অজয় কুমার বিশ্বাস
*******************
একফালি বাঁকা চাঁদ
গভীর নিস্তব্ধ রাতকে সাক্ষী রেখে
ডুবে গেল নীরবে।
স্বপ্নের নীল নির্জনতায়
চলমান বিভৎসতার কালো দাগ
রেখে দেয় নিশ্চিত অস্থিরতা।
বিপন্ন সুখ কেড়ে নেয় ক্ষুধার্ত পেঁচা।
সমস্ত চাওয়া পাওয়াকে ব্যঙ্গ করে
বৃ্দ্ধ শকুনি বসে আছে বুনো চালতার ডালে।
অবিরাম মৃত্যুর হাতছানি,
মুছে দেয় হৃদয়ে জমে থাকা ভালবাসা
রাশি রাশি।
অগণিত পদধ্বনি ক্লান্তির অবসাদে
আশ্রয় নেয় শ্রান্তির কোলে।
অস্পষ্ট আলোর আভাসে
দোয়েল, কোয়েল, ফিঙে, টুনটুনির কলতানে
এক নতুন প্রভাত জেগে ওঠে।
হয়তো আশার আলো সামনে নিয়ে
এগিয়ে যাবে সেই নিরন্নের দল
না ভেবে কোন কথা।
ভুলে সকল অপমানের ব্যথা,
ভেজা আলপথে খুঁজে নেবে
আপন নীল নির্জনতা।
*********************
লিখে দেবো তোমার নামে
বিশ্বজিৎ মেটে
*********************
রেনিসা,হাজারও খুঁজলে পাবেনা আর
আমাকে;
যেদিন আমার কান্নার সশব্দে তোমার ঘুম
ভেঙে যাবে সেদিন ফিরে আসবো না আর
তোমার কাছে।
শিরা উপশিরা ছিঁড়ে যখন রক্তের স্রোত
প্রবাহিত হবে তখন কবিতার পাতা গুলো
চিৎকার করবে তোমার জন্য।
হাজারো খুঁজলে পাবে না আর রাতজাগা হলুদ
পাখিটকে।
অপেক্ষা ঝুলে থাকুক.....
মনের কোলাহল রোজ হয়,
শীত বলো বা বসন্ত বলো প্রেম বেঁচে থাকবে,
হারিয়ে যাবে শুধু মানুষ গুলো।
আবারও অকারণে রক্ত টপিয়ে পড়লো
মোহনায়;
ভালোবাসার বিদ্রোহী হলো,
প্রেমিকের পিঠে লেখা হলো অবিশ্বাসী,
প্রতিবাদী,
অভিনয়,
আরও অনেক কিছু..
কিছু না বলা কথার আর্তনাদ থাকবে সেদিন।
স্বপ্ন গুলো দু স্বপ্নের হাল খাতায় তুলে দিয়েছি..
একটু হাসতে গিয়ে ইচ্ছে গুলো পুড়িয়ে দিলাম,
আবারও একটু লিখতে গিয়ে ভালোবাসলাম।
হঠাৎ করে তোমার যদি সেই নদীর পাড়ের
কথা মনে পড়ে যায়,
তাহলে নিশ্চয় আসবে;
তখন আমি হারিয়ে যাবো নদীর ভিজে
বালিতে।
মনের সেলফোনে বেজে ওঠা প্রেমের গান
শুনতে শুনতে আমার জন্য যখন কবিতা
লিখবে তখন আমার খামখেয়ালি মুখটা ভেসে
উঠবে, কিন্তু খুঁজে পাবে না আমায়।
জীবনে জয়ের স্লোগান দিতে দিতে যেদিন
আমার গলার আওয়াজ মনে পড়বে;
রাতের অপ্সরা হয়ে যেদিন আমার লেখা
পড়বে,
সেদিন হাজারও খুঁজলে পাবে না আমায়...
*********************
রঙ্গমঞ্চ
মেনকা বিশ্বাস
*********************
এই বিরাট বিশ্ব প্রকৃতির বিশাল রঙ্গমঞ্চ
সৃষ্টিকর্তা নাট্যকারের চিরন্তন নাট্যশালা
গরু -ছাগল -ভেড়া,বাঘ -সিংহ- কুকুর
সাপ পোকামাকড় পশুপাখি বিড়াল
সকলে হাজির হয় নিজ নিজ অভিনয়
সম্পাদনে
মানুষ সবার উপরে,রাগ টানে সারা বেলা।
দিন যায় দিন আসে
জন্ম-মৃত্যু তে পর্দা নামে পর্দা ওঠে
জলে-স্থলে প্রকৃতির ফুলে-ফলে
রঙ্গমঞ্চের চার দেওয়ালে নিপুন কীর্তি
পটো পরিবর্তনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে
মাধুর্যময় রূপ-রস হৃদয়গ্রাহী শোভাবর্ধনে ।
ভাষাতীত সে দৃশ্যপট যুগ-যুগান্তরের পথে
ভাব প্রকাশের গতিময়তায়
নব নব উদ্ভাবনীয় চেতনায়
সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা বিপুল আয়োজনে
প্রকৃতির রঙ্গমঞ্চে একে অপরের সঙ্গে
সকলেই বাঁধা আছে একসূত্রে
আত্ম যোগে অদৃশ্য এক নিবিড় বন্ধনে ।
*********************
" সমুদ্র সৈকতে "
সুধাংশু বিশ্বাস।
বারাণসী
*****************
একা বসে ভাবি আমি
দীঘার সমুদ্র তীরে,
দূর হতে ভেসে আসে গর্জন
বুক ভাসে নয়নের নীরে!
তোমাকে হারানোর ব্যথা
যদিও পাই এই ক্ষণে,
সমুদ্র সৈকতের যতো নুড়ি
কুড়িয়েছি তোমার সনে!
রেখেছি সাজিয়ে তাহা
বালুয়াড়ির সৈকত তীরে,
যেথায় বসে আমরা দেখেছি
সন্ধ্যা নামতে ধীরে ধীরে!
তোমার পদচিহ্নের পথ ধরে
তোমাকে খুঁজে খুঁজে মরি,
কোথাও পাইনি বলে তাই
চলেছি বালুর সরূপথ ধরি!
আজ তুমি নেই পাশে
বিজন সমুদ্রের তীর,
দূর দূর শুধু বালুর চর
নয়নে ঝরে ঝর নীর!
কোথা তুমি চলে গেছো
কোন দেশে কোন সুদূরে,
বসে বসে ভাবি আমি
দীঘার সমুদ্র তীরে!
সুধাংশু বিশ্বাস।
বারাণসী
১১/৬/২০২০/
-----------------------
*********************
তোমায় সব দিলাম
সুশান্ত মোহন চট্টোপাধ্যায়
*****************
এক আকাশ বৃষ্টি দিলাম
তুমি শরীর ভিজিও
গহীন রাতে শুকালে গলা
তৃষ্ণা মিটিয়ে নিও।
একটা বড় সূর্য দিলাম
আলোয় ভরে থেকো
শীত কাতুরে ঘুম ভেঙ্গে
উত্তাপ জমিয়ে রেখো।
সুদূর দিগন্তের সাথে
তোমায় মুক্তি দিলাম
হেথা হোথা ঘুরে ঘুরে
আমি ছুটি নিলাম।
আমার ব্যাথা ভষ্মে চেপে
তোমায় ঘৃত দিলাম
অপারগতার ক্ষমতাটুকু
যজ্ঞে আহুতি নিলাম।
মন পাখিকে উড়িয়ে দিয়ে
ঘুরব তোমার পিছে
বুঝবে না জানি তবু
সবই যে হলো মিছে।
চাকচিক্যের এই জগৎটায়
চাওয়ার তো নেই শেষ
ভালো থেকো সুখে থেকো
রইলো শুভেচ্ছা অশেষ।
* * *
*********************
শতকের মেহগনি
সঞ্জীব চক্রবর্তী
*********************
তোমার high profile বাঁচা
নীলচে..বিলাসবহুল বাড়ি
আমি ঝান্ডা..মিটিং..ব্রিগেড
আমি typical আনাড়ি..
তোমার হাজার বায়না
দই-ফুচকা..বিরিয়ানি..cell-phone
আমি পার্টির whole-timer
ঘরে মা-মরা দুই বোন..
তোমার বাবা ধোপদুরস্ত নেতা
দেশ-বিদেশে কাটান দিন
আমি শহীদের উওরাধিকার
আত্মপরিচয়ে চালচুলোহীন।.
তোমার journalism-এর study
দৌঁড় ঝাপ..কতই হাঁটাহাঁটি
আমি চাকরির খোঁজে নাকাল
আমি graduate মোটামুটি..
কাল msg-এ
তোমার proposal'টা পড়ে
সারা রাত্রি জুড়ে আমি
শুধুই ভেবেছি জানো
এটা নিছকই পাগলামি ..
তোমায় ছুটতে হবে অনেক
সামনে ভোগের হাতছানি
তুমি বসন্তে ফোটা গোলাপ
আমি শতকের মেহগনি