• 23 August 2020

    ধর্ষিতার সন্তান অধ্যায় 3

    ধারাবাহিক উপন্যাস

    5 90

    ধর্ষিতার সন্তান অধ্যায় 3
    লেখক :- শংকর হালদার শৈলবালা
    (চরিত্রহীন লম্পট উপন্যাসের লেখক )
    যাযাবর বেদে সম্প্রদায়ের তথ্যভিত্তিক ধারাবাহিক উপন্যাস ।
    লেখা প্রকাশের তারিখ :- 23 আগস্ট 2020
    শব্দ সংখ্যা :- 664
    ••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

    যাযাবর বেদে সম্প্রদায়ের আরেকটি দল সমতল বাস করে থাকেন।
    এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা ঝাড়ফুঁক, বাতের ব্যথা, দাঁতের ব্যথা, দাঁতের পোকা তোলা, ভূত প্রেত ছাড়ানো ও বাচ্চাদের দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করানো ইত্যাদি ইত্যাদি কর্মের দ্বারা জীবন জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করে।
    এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা যথেষ্ট নোংরা হয়ে থাকে, নিজের শরীরের প্রতি তেমন কোনো যত্ন নিতে চাই না।
    তেল ব্যবহার না করার জন্য চুল কটা ও জটা ধরে থাকে ছেলেমেয়েদের।
    এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা খাদ্য রসিক নয়, প্রকৃতির উপর নির্ভর করে যখন যা পাওয়া যায় তখন তাহা খাওয়া-দাওয়া করে যেমন সাপ ব্যাঙ ইন্দুর বিভিন্ন জীব জন্তুর ইত্যাদি ইত্যাদি।
    জলে নৌকায় বাস করে ও সমতলের তাঁবু টানিয়ে মাঠের মধ্যে বা ফাঁকা জায়গাতে বাস করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রাতদিন পার্থক্য আছে। কথাবার্তায়, আচার আচারণ, খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা ও পোশাক-পরিচ্ছদ সর্বদিক দিয়ে আলাদা।

    আরনা ভাবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টিকর্তা কিন্তু পথে-ঘাটে আমাদের জীবন যাপন করতে হয়। পথে ঘাটে চলে আমাদের সম্প্রদায়ের সৃষ্টি চক্র। পথের মাঝে আমাদের ভালোবাসা, বিয়ে, আত্মীয়-স্বজনের আত্মীয়তা রক্ষা করা, ভালোবাসার মিলন চক্র, যৌনাচার, সন্তান উৎপাদন ও লালন পালন করে বড় করে তোলা। জীবন যুদ্ধের জন্য আয় ব্যয়, নতুন জীবনের জন্য স্বপ্ন দেখা আবার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে আমাদের রাস্তার মাঝেই মৃত্যু ঘটে।
    এই সুন্দর পৃথিবীর সৃষ্টির ভালো মন্দ সবকিছুই আমাদের পথে ঘাটে।

    যাযাবর বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে মাতৃতান্ত্রিক বলা হয়ে থাকে কারণ সন্তানের পরিচয়়় লাভ হয় মায়ের নামে।
    কারণ হিসাবে দেখা যায় আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্মদাতা পিতা কে ?
    হয়তো মা নিজেও জানেন না কারণ বিবাহিত জীবনে মহিলা-পুরুষগণ বহু নারী পুরুষের সঙ্গ করে থাকে, অবাধে মেলামেশা সুযোগ রয়েছে নারী-পুরুষগণের।
    কিন্তু বিবাহিত নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে নয়, সহমতের সহিত মিলন চক্র আবদ্ধ হতে পারে।
    যার সাথে যার থাকে ভালোবাসা, তার কাছে যাই চলে।
    মিলনের জন্য প্রস্তাব দিতে পারে কিন্তু নারীর ইচ্ছাধীন।
    এই পদ্ধতি বংশ-পরম্পরা চলে আসছে বহু বহু যুগ ধরে, যৌনতা রাতের উৎসব মনে করে।
    নেশা করে পরিবারের সবাই শিশু থেকেই মাদকতা দেওয়া হয় জলের বদলে।

    বর্তমান বিংশ শতাব্দীর বেদে সম্প্রদায়ের নারীগণ এক পুরুষকে নিয়ে, নারী জীবন কাটাতে আগ্রহী বেশি কারণ বহু পুরুষের সাথে মিলিত হলে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকতে হয়।
    যেমন রোজগারের অর্থ ভাগ দিতে হয়, সন্তানের দায়িত্ব পুরুষেরা নিতে চাই না।
    সন্তানগণ অবহেলা সহিত বড়় হতে থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
    বর্তমান বেদে নারীগণ মনে করে জীবনে বেঁঁচে থাকার জন্য একটি পুরুষ যথেষ্ট।

    বেদে সম্প্রদায়ের সমাজ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, সুপ্রাচীন কাল থেকে মহিলা তান্ত্রিক।
    প্রধান কারণ হিসাবে দেখা যায় বেদে সম্প্রদায়ের নারীদের বিবাহের সময়ে পুরুষদের কে প্রতিশ্রুতি দিতে হয় মহিলাদের কে।
    প্রতিশ্রুতি মন্ত্র হলো
    * আমি সারা জীবন পরিশ্রম করে, তোমার সংসার চালাবো, সন্তানাদি জন্ম দিয়ে লালন পালন করবো, তোমার বিরুদ্ধে কথা বলবো না, স্বামী তুমি ইচ্ছাধীন চলাফেরা করবে ও আমি তোমার কোন বাধা সৃষ্টি করবে না ইত্যাদি ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি দিতে হয়।*

    প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হওয়ার জন্য বেদে মহিলাদের প্রতি নিয়ত কাজের সন্ধানে বের হতে হয়, বেশিরভাগ পুরুষেরা নৌকাতেই বা তাঁবুতে থাকে নেশাগ্রস্থ হয়ে।

    এখানে বহু পুরনো দিনের বেদে সমাজের কথা আলোচনা করা হয়েছে, যখন স্থায়ীভাবে বসবাস গড়ে ওঠেনি।
    বর্তমান বিংশ শতাব্দীতে অনেক উন্নতি ঘটেছে, বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে।

    আরনা বলে আমাদের সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষের মধ্যে রাত্রিবেলায় নেশাগ্রস্ত হয়ে কে কার ঘরে যায় বলা মুশকিল ।

    এই কারণে আমাদের মায়ের পরিচয় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়, মায়ের পরিচয়ে আমাদের মাতৃত্ব পরিচয়।

    বর্তমান মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বিরাজমান থাকলেও, পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। বর্তমান সন্তানদের পরিচয় পিতার পরিচয়ে হয়ে থাকে।
    চলতি সমাজের সাথে মিশে গিয়েছে।

    আমার মায়ের দশটি মেয়ে ও সাত জন ছেলে সর্ব মোট 17 জন ভাই বোন, কয়েক জন মারা গেছে। বেদে সম্প্রদায়ের মানুষেরা সন্তান উৎপাদন করা কোনদিন বন্ধ দেবে না।
    বেদে নারীরা বলে দেহে আছে যতদিন যৌবন ততদিন বছর বছর সন্তান জন্ম দিতে হবে ঈশ্বর আল্লাহ ভগবন দিয়ে যাচ্ছে সন্তানাদি আমরা করবো কি ?
    এক মহিলা বলে প্রতি রাতে চলতে থাকে যৌনাচার নেশাগ্রস্ত হয়ে ।
    একটি সন্তানের জন্ম দেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই, নতুন করে গর্ভবতী হয়ে পড়তে হয় সৃষ্টি বন্ধ করা যাবে না।

    আমার মায়ের সব থেকে ছোট মেয়ে আমি, মা বিরক্ত হয়ে আমার নাম দিয়েছিল আরনা অর্থাৎ নতুন করে আর সন্তান চাই না।
    আমার পরেও মা আবার নতুন করে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন, ডেলিভারি হওয়ার সময় বাচ্চা সহ মা মারা যায় ।_________________________________________

    ^^^^^ ধর্ষিতার সন্তান অধ্যায় 3 সমাপ্ত^^^^^^

    আরনা বলে আমার জীবন কথা কি ?
    কি ভাবে আমি ধর্ষিত হলাম ?
    কেন ধর্ষিত সন্তানের জন্ম দিলাম জানতেে পরবর্তী পর্ব গুলো পড়ুন



    শংকর হালদার শৈলবালা


Your Rating
blank-star-rating
Lata Biswas - (24 August 2020) 5
ভীষণ ভালো লাগলো । পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম । ধন্যবাদ আপনাকে ।

0 0