শপিজেন বাংলা
উপহার
-----------
তরুণ কুমার ইন্দু
যে রাত জুড়ে জোনাকীরা কথাকলি এঁকে যাবে
গভীর নিস্তব্ধতায় থাকবে একমুঠো ঝিঁঝিঁর গুঞ্জন;
আমার খোলা জানালায় উঁকি দিয়ে যাবে
এক চিলতে চাঁদের সোহাগ।
বেহাগ সুরে রাগিনী ঝরে পড়বে বাঁশের বনে,
তৃষিত আকাশের বুকে থাকবে চঞ্চল মেঘেদের
সুচতুর আনাগোনা।
রাতজাগা রজনীগন্ধার স্বপ্নীল চোখে
জেগে উঠবে একমুঠো মিলন-পিয়াস–
তবুও তুমি দূরেই থেকো,
শুধু রাতটুকু দিয়ো আমায়;
সে হোক না যতই, তোমার বঞ্চনার উপহার।।
যে রাতে টুপটাপ ঝরবে শিশির নিঃস্ব ঘাসেদের বুকে
আঁতর ঢেলে শিউলি উঠবে নেচে নরম মাটির আঙিনায়;
মিটিমিটি ইশারায় তারারা সাজাবে নিথর কথামালা,
স্বর্ণচাঁপার গন্ধে একঝাঁক মৌমাছির সুর-বাহার;
পাখনা ছড়িয়ে একটি পেঁচা খুঁজে নেবে় তার প্রেয়সীকে,
কিছু রাতচরা পাখিরা ফিরবে বাসায় নেশাতুর মন নিয়ে।
যে রাতে পাতা ঝরার শব্দে দু-নয়ন জুড়ে নামবে স্বপ্ন;
নীবিড় প্রাণে একান্তে, বইবে এলোমেলো সুখের বিয়াস–
তবুও তুমি দূরেই থেকো,
শুধু রাতটুকু দিয়ো আমায়;
সে হোক না যতই, তোমার অবহেলার উপহার।।
যে রাতে অঝোর ধারায় বাজবে বৃষ্টির জলতরঙ্গ
খুশির জোয়ারে ভাসবে আধফোঁটা বেল-জুঁই-লিলি
নীল দিগন্ত জুড়ে থাকবে শুধু তোমাকে ছোঁয়ার আহ্বান;
রামধনুর তীব্র আবেদনে থাকবে তোমাকে না পাওয়ার
শুভ্র আকুলতা।
প্রতিটি রাতের কিনারায় থাকবে
একবুক শুভেচ্ছার হাহাকার;
যে রাতে দগ্ধ হবে এ মন অবিরত–
তবুও তুমি দূরেই থেকো,
শুধু রাতটুকু দিয়ো আমায়;
সে হোক না যতই, তোমার যাতনার উপহার।।